কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ নেতাদের রাস্তায় দেখামাত্র পেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন কুষ্টিয়ার এক যুবদল নেতা। পরে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার নিমতলা বাজারে যুবদলের একটি কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ওই বক্তব্য দেন। পরে তার ওই বক্তব্যের ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
রফিকুল কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানের ভাগনে। ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে রফিকুল ইসলাম বলেন, “যদি কখনও কোনো আওয়ামী লীগকে দেখেন-রাস্তায় পিটিয়ে মারবেন।” তিনি যখন এই বক্তব্য দেন, তখন তার সামনে দলের নেতাকর্মীদের চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে এ সময় হাততালিও দেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের গালিগালাজ করে যুবদল নেতা রফিকুল বলেন, “ওরা আমাদের রাস্তায় বের হতে দেয়নি। আমাদের বাজারে যেতে দেয়নি, এমনকি বাজার পর্যন্ত করতে দেয়নি। এতো জঘন্য তারা। ওরা যে রাজনীতি করে, সবচেয়ে জঘন্য রাজনীতি করে।”
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে ওই যুবদল নেতা বলেছেন, “বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের তিনজন একসঙ্গে বসতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করা হইছে। আমাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে।
“আমাদের ওপরে নাশকতার মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেক কষ্ট করেছি। তাই আপনাদের অনুরোধ করব, দলের ভেতরে কোনো গ্রুপিং করবেন না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করবেন।”
এই বক্তব্যের বিষয়ে রফিকুল বলেন, “ওইটা রাজনৈতিক বক্তব্য। ৫ অগাস্টের পর আমরাই আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর পাহারা দিয়েছি।”
তার দাবি, কোনো অন্যায় না করেও শুধুমাত্র মিরপুর বিএনপির নেতা রব্বানের ভাগনে হওয়ায় কারণে ১৬ বছর ধরে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেই কষ্টের আবেগে কথাটা বলেছেন তিনি। এজন্য নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখও প্রকাশ করেন এই যুবদল নেতা।
ভাগনের বক্তব্যের ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বান বলেন, “এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। এটা আমাদের দলের আদর্শ না। আমরাও যদি আওয়ামী লীগের মতো সন্ত্রাসী আচরণ করি, সেটা তো জনগণ আশা করে না।
“এজন্য হাজারো মানুষ জীবন দিয়ে গণঅভ্যুত্থান করেননি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কড়া নির্দেশ সন্ত্রাস করা যাবে না। এই বক্তব্যের দায় দল নেবে না।”
মিপুরর থানার ওসি মোস্তফা হাবীবুল্লাহ বলেন, “এটা আমার জানার বিষয় নয়। কোথায় কী স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলো সেসব আমি কিছু জানি না, কিছু বলতেও পারবো না।”