মেহেরপুর প্রতিনিধি : পারিবারিক চাহিদা মেটানো এবং দেশে দুরের জেলায় এবং প্রবাসে কর্মরত ছেলে মেয়েসহ স্বজনের কাছে পাঠাতে হবে সুস্বাদু বড়ি। এজন্য শীত উপেক্ষা করে চাল কুমড়া আর কলাইয়ের ডালের বড়ি বানাবার ধুম লেগেছে মেহেরপুরে। কলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়া দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু বড়ি। এই বড়ি নিয়ে আছে অনেক গল্প, কবিতা। মেহেরপুরের বিভিন্ন বাড়িতে এই শীতের সকালে চলছে বড়ি বসানোর ধুম। একই সাথে পুকুর, নদী, জলাশয়ে কুমড়োর বড়ি দেবার জন্য কলাইয়ের ডাল ধোয়ারও চলছে। বাড়ির বউ শাশুড়ি, মেয়েরা মিলে পুকুর আর নদীসহ উন্মুক্ত জলাশয়ে কলাইয়ের ডাল ধুতে দেখা যায়। কাকডাকা ভোরে বাড়ি বৌ-ঝিরা যেন মেতে উঠেছে কলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়োর বড়ি তৈরি করতে।
শীতকালে বড়ির চাহিদা থাকে বেশি। বড়ি তৈরিতে পরিশ্রম বেশি হলেও লাভও হয় বেশি। আগে সব সময় কলাই পাওয়া গেলেও কুমড়া পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন বড়ি দেওয়ার জন্য কুমড়াও পাওয়া যায় সব সময়। কারণ বানিজ্যিক ভিত্তিতে এখন কুমড়া চাষ হয়।
মেহেরপুর ভৈরব নদে কলাইয়ের ডাল ধুতে এসে রানী হালদার বলেন- শীতকালে যে বড়ি বানিয়ে রাখি তা সারা বছর খাই। শীতের সকালে বড়ি আর মাছ রান্না থাকলে আর কোন তরকারি লাগে না।
মেহেরপুর শহরের বড় বাজারের চাল কুমড়ার বড়ি বিক্রতা রাকিবুল ইসলাম বলেন- মেহেরপুরের কুমড়ার বড়ির চাহিদা অনেক। প্রতিদিন তিনি ১৫ থেকে ২০ কেজি বড়ি বিক্রি করেন। এক শ্রেণীর বড়ি বিক্রেতা সবজি দিয়ে তৈরি বড়ি কমদামে বিক্রি করার কারণে মেহেরপুরের বড়ির মান কমে যাচ্ছে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন পারভীন জানান, বড়ি বানাতে চাল কুমড়ার বিকল্প নেই। গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাল কুমড়ার চাষ হচ্ছে। বসতবাড়ির অঙিনায়, অনাবাদি পতিত জমি এবং সাথী ফসল হিসেবে জমিতে চাল কুমড়োর চাষ বাড়ছে। প্রতি বিঘাতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার কুমড়ো বেচা কেনা হবে। যা অনেক লাভজনক। এই কুমড়ো চাষ মাত্র ১শ দিনে হয়।