সোমেল রানা, মেহেরপুর : বাঁশের ঝুড়িতে সবুজ পাতায় ঢেকে বিক্রি হচ্ছে লিচু। লাল সবুজ রঙের থোকা থোকা লিচুুুুুু দৃষ্টি কাড়ছে মানুষের। সুস্বাদু আমের জেলা মেহেরপুরের আঁটি মোজাফ্ফর জাতের লিচু পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। সপ্তাহখানেক পরে আসবে মাদ্রাজি, বোম্বাই, বেদানা, চাইনা জাতের লিচু।
জেলায় স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া মোজাফ্ফর জাতের লিচু স্বাদে গন্ধে ভরা। স্থানীয় মোজাফ্ফর জাতেরসহ বিভিন্ন জাতের লিচু মিলে জেলায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। প্রাকৃতিক কোন ধরণের দুর্যোগ না হলে ৪শ’ মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা। এলাকার চাকুরিজীবীরা ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে নিয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু লিচু।
ব্যবসায়ীরা এসব লিচু কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় জেলা শহরগুলোতে নিয়ে যাচ্ছে। ভৌগলিক কারনে মেহেরপুরের লিচু বৈশাখের মাঝামাঝি পেকে যায়। লিচু ব্যবসায়ীরা বাঁশের ঝুড়িতে লিচুর সবুজ পাতায় ঢেকে পাটের বস্তায় মুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ঝুড়ির শরীরে চটে লেখা হচ্ছে ঢাকার ব্যবসায়ীর ঠিকানা ও প্রেরকের নাম। বিকেল হলেই সেসব লিচুভরা ঝুড়ি লরিতে তোলা হচ্ছে। ছুটছে ঢাকা, চিটিগাংসহ বিভিন্ন শহরে। মেহেরপুর পাইকারি প্রতি হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪শ টাকায়।
আম-কাঁঠালের পাশাপাশি মেহেরপুরের লিচু সুস্বাদু। চাহিদাও ভালো। ভৌগলিক কারণে মেহেরপুরের লিচু আগে পাকে। এজন্য অন্য জেলায় আগেই বাজারজাত করা যায়। মেহেরপুরের লিচুর কদর হিমসাগর আমের মতোই। লিচু ক্ষণকালীন ফল। তবে আগাম উৎপাদন ও অধিক দামের কারণে লিচু চাষে কৃষকরা অধিক উৎসাহী হয়ে পড়েছে।
এই জেলায় উৎপাদিত লিচু দেশি ও আটি মোজাফফর জাতের (গুটি লিচুও বলা হয়ে থাকে) চাষ আছে। তবে প্রখ্যাত লিচুর মধ্যে আতা বোম্বাইয়ের চাহিদা বেশি। কারণ মাংসল, রসালো, সুমিষ্ট ও ছোট বিচির ও টকটকে লাল এই লিচু ক্রেতারা বেশি পছন্দ করে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ৮০ ভাগ বাগানে আটি লিচু চাষ হয়। এই লিচুর বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- আটি মোজাফফর জাতির লিচু আগাম পাকে। সংখ্যায় বেশী ধরে। পোকার আক্রমণ কম হয়। ফলের ৭০ ভাগই রসালো। জেলায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। ৪শ’ মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হবে।