মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর : দক্ষীণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহি দ্বিনীপ্রতিষ্ঠান মাসনা মাদরাসা জামে মসজিদের জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মহাসিন মোড়ল নামে এক ব্যক্তি। তিনি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মাসনা গ্রামের মৃত বদর উদ্দীন মোড়লের ছেলে। এ অঞ্চলের দলমত, ধর্ম-বর্ণ সবার শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব মাদ্রসার মুহতামিম মুফতি ইয়াহিয়া’র নামে একের পর এক মামলা দেয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মহাসিনের বিরম্নদ্ধে। এতে সর্বমহলে ড়্গােভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, পৈত্রিক ৯৮ শতক জমির মধ্যে মহাসিনের সহোদর ইকবাল হোসেন ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল ওই মসজিদের নামে ৪৬.২১ শতক জমি দানপত্র করে দেন। যার দলিল খরচসহ সমুদয় ব্যয়ভার বহন করেন দাতা ইকবাল হোসেন। ১০৫ নং বাহাদুরপুর মৌজায় দুই তফসিল বর্ণিত ৭৯০ আরএস চূড়াšত্ম খতিয়ানভুক্ত ৩৭৪৬ দাগ হতে ২৮.৭৭ এবং একই খতিয়ান (৭৯০) আরএস চূড়াšত্ম নামজারি খতিয়ান ১৮৭৫ নং নামজারি খতিয়ানের ১৭.৪৪ শতক সর্বমোট ৪৬.২১ শতক জমি ওই মসজিদের নামে দানপত্র করে দেন।
এর আগে ওই খতিয়ানের জমি হতে ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই ইকবাল হোসেন তার ছোট ভাই আক্তারম্নজ্জামানের কাছ থেকে কেনেন। তার ভাইয়ের কাছ থেকে জমি কেনার সময় সনাক্তকারী দিয়েছিলেন মহাসিন নিজেসহ তার অপর দুই ভাই হাফিজুর রহমান ও আলী হায়দার। সনাক্তকারী হওয়ায় শর্তে মহাসিন অপর চার ভাইয়ের কাছ থেকে একই দিন ৮ শতক জমি লিখে নেন।
একই মৌজায় পৈত্রিক ১৫২৮ খতিয়ানের ৪৫৩৩ দাগের ৫৬ শতক জমি ইকবাল হোসেন ছাড়া বাকি চার ভাই মহসিন, আলী হায়দার, আক্তারম্নজ্জামান ও হাফিজুর রহমান একই এলাকার তোফাজ্জেল হোসেন ও শহিদুল মাস্টারেরর কাছে বিক্রি করেন। পরে রেকর্ড সংশোধনীতে ইকবাল হোসেনের প্রাপ্য জমি রয়ে যায়। এক পর্যায় পৈত্রিক ৯৮ শতক জমি হতে ওই জমি ইকবাল হোসেনের নামে খতিয়ানভুক্ত হয়।
ছোট ভাই আক্তারম্নজ্জামানের কাছ থেকে কেনা বাবদ ১৭.৪৪ শতক, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ইকবালের নিজের ১৭.৪৪ শতক এবং ১৫২৮ খতিয়ানের ৪৫৩৩ দাগের ৫৬ শতক জমি থেকে পাওয়া সবমিলিয়ে প্রাপ্য ৪৬.২১ শতক জমি মাসনা মাদরাসা মসজিদের নামে দানপত্র করে দেন। যার সর্বশেষ আরএস রেকর্ডে ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৭৯০ খতিয়ানের ৯৮ শতক জমির মধ্য ইকবাল হোসেনের নামে বেশি জমি (.৩১৭ শতক) রেকর্ড হয়।
এদিকে মসজিদের নামে জমি লিখে দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ইকবাল হোসেনের নামে মামলা ঠুকে দেন মহসিন। ইতোমধ্যে ওই জমি মসজিদের নামে নামপত্তন হয়েছে।
এদিকে মহাসিন মসজিদের দানকৃত জমি হাতিয়ে তথা নিজের দখলে নিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেয়।
মাদরাসা’র মুহতামিম মুফতি ইয়াহিয়া’কে জড়িয়ে একাধিক মামলা করেছে মহসিন। মুফতি ইয়াহিয়া’র নামে মামলা দেওয়া এলাকাবাসি ফুসে উঠেছে। এক পর্যায় ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মহাসিনের বড় ছেলে বিজিবি সদস্য হাবিবুর রহমানের উপস্থিতিতে দানকৃত জমি মাসনা মাদরাসা মসজিদের অনুকূলে বুঝে দেওয়া হয়। ওই সময় জমির কিছু অংশে মহাসিন ধানের বীজতলা ফেলেন।
উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ মহাসিনকে ধানের চারা উঠানো পর্যšত্ম সময় দেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ভোল পাল্টে ফেলেন মহাসিন। ফের জমি দখলে নিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেয় মহাসিন। বাকি জমি বুঝে দিতে মহাসিন টালবাহানা করতে থাকলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ চলতি বছরের ৫ মার্চ জমি বুঝে নিতে গেলে বাধা দেয় মহাসিন। ওই সময় মহাসিন বালতি ভর্তি শুকনো মরিচের গুড়া নিড়্গপে করতে থাকে লোকজনের উপর। এতে ড়্গপ্তি হয়ে উঠলে মহাসিন পালিয়ে যায়। এ ঘটনাকে পূজি করে মহাসিন আবারো মামলা ঠুকে দেয়।
স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ, ইউপি সদস্য শিমুল গাজীসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, মহাসিন এলাকায় মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। এরপরও বিষয়টি মিমাংসার জন্য মহাসিনের কাছে তারা একাধিকবার গেছেন। কিন্তু তিনি কোন কথায় কর্ণপাত করেনি। তাদের ধারনা ইকবাল হোসেনের কোন পুত্র সšত্মান না থাকায় ওই জমি ভোগ দখলের আকাংখায় জমি ছাড়তে নারাজ মহাসিন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি ইয়াহিয়া বলেন, তিনি জানতেন না এটি বিরোধপূর্ণ জমি। জানার পর তিনি মহসিনের কাছে একাধিবার লোক পাঠিয়েছেন তার দাবি জানতে। এমনকি তিনি শান্তির জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন যদি আদালতের মাধ্যমে মহাসিন পেয়ে যান, তখনি ওই জমি ছেড়ে দেওয়া হবে। নাহলে মহাসিনের দাবিকৃত ১১ শতক জমির মূল্য পরিশোধ করতেও মসজিদ কর্তৃপড়্গরে কাছে আলোচনা সাপেড়্গে সমপিরমান অর্থ পরিশোধ করতে চেয়েছেন। কিন্তু মহাসিন কোন কথায় কর্ণপাত না করে নানা অপততপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন ।