৭ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মানসিক ভারসাম্যহীন মা গেলেন গাজীপুরে জমজ সন্তান মুসা ও মাইশা খুলনায়
125 বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বাঘারপাড়ায় জমজ সন্তানের জন্ম দেয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাজীপুরে ও দুই নবজাতককে খুলনার ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে আলাদা দু’টি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদেরকে সরকারি দুই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আদালতের নির্দেশনায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা মোছা. মাহিনুর গেলেন গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। আর জমজ দুই শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশা গেলো খুলনার ছোটমনি নিবাসে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে মা মোছা. মাহিনুর ও দুই শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশাকে বিদায় জানান যশোর—৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলী মোল্লা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ের সমাজসেবা অফিসার রুবেল হাওলাদার। পরে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারও তাদেরকে বিদায় জানান। মা মোছা. মাহিনুরকে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকতা মুনা আফরিণ এবং শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশাকে নিয়ে খুলনার ছোটমনি নিবাসের উদ্দেশে যাত্রা করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের চাইল্ড প্রটেকশন কর্মকর্তা খালেদা আক্তার।

যশোর—৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায় বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা বাঘারপাড়াতে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে হাসপাতালে তাদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করে মাকে গাজীপুরে আশ্রয় কেন্দ্রে এবং দুই সন্তানকে খুলনার ছোটমনি নিবাসে প্রেরণ করা হচ্ছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও তার দুই সন্তানকে পাওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসা ও দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশনায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা ও দুই সন্তানকে দু’টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করা হচ্ছে। রাষ্ট্র তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

যশোর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ বলেন, মা ও দুই নবজাতক হাসপাতালে আসার পর আমরা সবধরণের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছি এবং দেখাশোনা করেছি। মা ও দুই সন্তানকে এখন সরকারি দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকতা মুনা আফরিণ বলেন, তিনি মা মাহিনুরকে নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন। সেখানে তাকে হস্তান্তর করে ফিরবেন। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বরর মা ও দুই নবজাতক যশোর হাসপাতালে আসার পর হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ, জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অফিস, আনসার সদস্য, এনজিও কর্মীদের সাথে তিনি গত ১৮দিন তাদের দেখভাল করেছেন। শিশু দু’টির নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশা।

এর আগে সোমবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় মা ও সন্তানদের এই দুই আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর গত বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের শুনানিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত—১ এর বিচারক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও দুই নবজাতকের বিষয়টি নিষ্পত্তি করার বিষয়ে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডকে দায়িত্ব দেন।
এদিকে, ১৮ দিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে জমজ সন্তান ও তাদের মা চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের স্বজনদের সন্ধান পাওয়া দেলেও তারা দায়িত্ব নিতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, গত ৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের বিছালির (খড়) ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পিবিআই ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে। পিবিআেই মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা মাহিনুর ও তার সন্তানদের নিতে রাজী হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram