নিজস্ব প্রতিবেদক : পুজোর ছুটিতে বন্ধ স্কুল। মাদরাসাও শনিবার বন্ধ সাপ্তাহিক ছুটির কারণে। অথচ এই ছুটির মধ্যে স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের আজ শনিবার হাজির হতে বলা হয়েছে।
কারণ এলাকার একটি সড়কের উদ্বোধন করা হবে। সড়কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ‘মাঠ ভরানোর জন্য’ জন্য ছুটি বাতিল করে শিক্ষার্থীদের হাজির হতে বলায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শনিবার যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের একটি সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। চুড়ামনকাটি হতে ঘোড়দহ মোড়ের মেহগনি তলা পর্যন্ত এই সড়কের উদ্বোধন উপলক্ষে স্থানীয় চান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এই অনুষ্ঠানের মাঠ ভরার জন্য দেয়াড়া সিএজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মঈনুল ইসলাম দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্কুলে পূজার ছুটি শুরু হলেও ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে ছুটি উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ে সমাবেশ করার জন্যে বলা হয়েছে।
সেই সমাবেশ থেকে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। আর পূজার ছুটি না হলেও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে মাদরাসায়। তারপরও স্থানীয় মঈনুল ইসলাম দাখিল মাদরাসাও একই কারণে আজ খোলা রাখা হয়েছে। অলিখিতভাবে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্যে চাপ দেয়া হয়েছে।
এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও এলাকাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পূজার ছুটি পেয়ে শিক্ষার্থীদের মনে যে আনন্দ ছিল তা নষ্ট হয়েছে। আবার ছেলে—মেয়ের ছুটির সাথে কোনো কোনো অভিভাবকের বেড়াতে যাওয়ার যে পরিকল্পনা ছিল তাও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পুজোর ছুটির মধ্যে এমন অনুষ্ঠানের জন্য ছুটি বাতিল এবং শিক্ষার্থীদের দিয়ে মাঠ ভরানোর পরিকল্পনায় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে সিএজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, সমাবেশ ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার শিক্ষার্থীদের আসতে বলা হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, এজন্য কাউকে বাধ্য করা হচ্ছে না। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেবে, এখানে চাপের কোনো বিষয় নেই।
এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দেয়াড়ায় এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠান আছে কিনা তিনি জানেন না। আর বন্ধের দিন শিক্ষার্থীদের স্থানীয় কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দেয়ার কথাও নয়। স্থানীয় কোনো কর্মসূচির জন্যে বন্ধ থাকা স্কুল, মাদরাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হওয়ার জন্যে বলাটা যৌক্তিকও নয়।