২০শে জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলার রায় ১৭ মে
মাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার আলোচিত সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। আগামী ১৭ মে এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিচারক। মঙ্গলবার (১৩ মে) মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন। অভিযোগ গঠন বা বিচার শুরুর ২১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলো।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম।

মামলাটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে। তিনিও মঙ্গলবার শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৭ মে দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।’

আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে উপস্থাপিত মৌখিক ও দালিলিক প্রমাণ আইনের ৩ ধারায় সব অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। নিহত শিশুটির বোনের শ্বশুরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রমাণ এবং পরিস্থিতিগত প্রমাণ তুলনা করলে দেখা যায়, আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, একটি শিশুর সঙ্গে যে নিষ্ঠুর, অমানবিক আচরণ করা হয়েছে, যা সাক্ষ্য এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রমাণে পেয়েছি, তা উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনও নারী-শিশুর সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ভুল করা যাবে না। তাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধান আসামি আদালতে জবানবন্দিতে স্পষ্টভাবে বলেছে, কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে এবং তাকে হত্যা করেছে। কাজেই মামলার আসামিদের করুণা পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। আমরা আদালতে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছি। আশা করা যায়, আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলায় বাদী, সাক্ষী, মেডিক্যাল পরীক্ষক এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২৯ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের শনাক্ত করা ও তাদের বক্তব্যও শুনেছেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ১৭ মে নির্ধারণ করেন বিচারক। এদিন আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল।

গত ২৭ এপ্রিল মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ছুটির দিন বাদে টানা শুনানি চলেছে। আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ শুনানি হয়। মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধ), শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ) অভিযোগ গঠন করা হয়।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। গত ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শিশুটি বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram