ফারুক আহমেদ, মাগুরা : মাগুরা সদর উপজেলার এম আর রোডের অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে আকস্মিকভাবে প্রায় ৫ লাখ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। তবে এই টাকা কীভাবে সরানো হলো বা আত্মসাত হল তার কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না কেউ।
এ বিষয়ে ঘটনায় ক্যাশ অফিসার মো. জিয়াউদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে অন্য কেউ শাস্তির আওতায় আসেনি। আবার পরবর্তীতে দাবি করা হয়েছে কোনো টাকা খোয়া যায়নি। গত ১৩ মার্চে টাকা গড়মিলের ঘটনা ঘটলেও এখনো লুকোচুরি চলছে।
জানা গেছে, ব্যাংকের হিসেবে গত ১২ মার্চ তারিখে ক্লোজিং ব্যালান্স ছিল ৪ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার একশত ঊননব্বই টাকা তেতত্রিশ পয়সা। কিন্তু ১৩ মার্চ সকালের ওপেনিং ক্যাশ পাওয়া যায় চার কোটি তেইশ লাখ বাহাত্তর হাজার একশত ঊননব্বই টাকা তেতত্রিশ পয়সা। অর্থাৎ ব্যাংক থেকে ৪ লাখ ৭১ হাজার টাকা চুরি ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ক্যাশ অফিসার মো. জিয়াউদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করলেও, ঘটনার রেশ যেন কিছুতেই থামছে না।
ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিনকে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভল্টের ৩ টি চাবির একটি থাকে আমার কাছে, একটি সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের কাছে ও অন্যটি শাখা ম্যানেজারের কাছে থাকে। ভল্ট খুলতে হলে অবশ্যই ৩টি চাবিই লাগবে কারো একার পক্ষে ভল্ট খুলে টাকা সরানো সম্ভব না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরেকজন ক্যাশ অফিসার জানান ব্যাংকে টাকার হিসেবে ভুল হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। ভুল হলে আমরা অনুসন্ধান করি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি অনেক ক্ষেত্রেই সেটা কাজে দেয়। কিন্তু ১৩ তারিখের ঘটনায় কোনো ধরণের অনুসন্ধান ছাড়াই জিয়াউদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সই করে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় চাপ দিয়ে অন্যায়ভাবে ৪ লাখ ৭১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে, সেটা খুবই দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া ব্যাংকের হিসাব বিভাগটি সিসিটিভির আওতাভুক্ত। কোনো সন্দেহ হলে সেটার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অভিযুক্ত জিয়াউদ্দিন আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘদিন সুনামের সাথে অগ্রণী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় চাকরি করেছি। আমার বিরুদ্ধ কোনো অভিযোগ কেউ দিতে পারেনি কিন্তু এইঘটনায় কোনো ধরণের তদন্ত ছাড়াই আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
এব্যাপারে ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার অসীম কুমার বিশ্বাস সরাসরি টাকা হারানোর ঘটনাটি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন আমাদের ব্যাংকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে জানান, একজন গ্রাহক চেক দিয়েছিলেন সেই চেকটি আমরা হিসেব করতে ভুলে গেছিলাম। পরে অবশ্য হিসেব মেলানো হয়েছে।
এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে কেন ভয়ভীতি দেখিয়ে জিয়াউদ্দিনের সাক্ষর নেওয়া হলো এবং তার কাছ থেকে ৪ লাখ ৭১ হাজার টাকা আদায় করা হলো? তবে তিনি এর কোনো উত্তর দেননি। ব্যাংক ম্যানেজার নাজমুস সাদাদকে ২১ মার্চ তারিখে তার অফিসে পাওয়া যায়। তিনিও দাবি করেন ভোল্ট থেকে কোনো টাকা চুরি হয়নি ওই দিন একটি চেক আমাদের হিসেবের বাইরে ছিল। তবে ওই নির্দিষ্ট চেক দেখতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।