১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মশার বিচরণ অলিগলি ও ঘিঞ্জি এলাকায়
মশার বিচরণ অলিগলি ও ঘিঞ্জি এলাকায় : স্প্রে করা হয় শুধু প্রধান সড়ক-ড্রেনে

ইমরান হোসেন পিংকু : রাজধানী ঢাকা চট্টগ্রামের পাশাপাশি ডেঙ্গু চোখ রাঙ্গাচ্ছে যশোরেও। প্রতিদিনই হাসপাতালে নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে অনুভব করছে যশোর পৌরসভা। আজকের মিটিংয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।


১৪.৭২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনজুড়ে যশোর পৌরসভা। এখানে দিন নেই, রাত নেই মশার ভনভন শব্দ। ডেঙ্গুর ভয় মনে ভর করলেও পৌরবাসীর করার কিছুই নেই। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, যশোর পৌরসভার ড্রেনগুলোতে পানির স্্েরাত নেই। ড্রেন থেকে নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করা হয় না। ফলে ড্রেনের পানির মধ্যে পড়ে থাকা ডাবের খোসা ও টায়ারের ভিতরে এডিস মশা ডিম পাড়ছে। ফলে এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করতে না পারলে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকবে যশোর। অন্যদিকে যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, ড্রেনের পানিতে শুধু সাধারণ মশা জন্ম নেয়। এখানে কোনো এডিস মশা ডিম পাড়ে না।’


যশোর পৌরসভার দাবি, ডেঙ্গু রোধে কাজ করছেন কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, যশোর পৌরসভার পক্ষ থেকে দুইদিন ডেঙ্গু সচেতনতার মাইকিং করা হয়েছে। ফগারমেশিন দিয়ে ধোয়া মারা হয়েছে। যেসব নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা আছে সেখানে সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে পানি সরানো হচ্ছে। একই সাথে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য ৯ ওয়ার্ডে ২৭টি ওষুধ স্প্রেমেশিন প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মাসিক মিটিংয়ে এডিস মশা নিধনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে কাজ শুরু করা হবে।


যশোর পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, যশোর পৌরসভার উদ্যোগে ঠিকঠাকভাবে ময়লা পরিষ্কার করা হয় না। একই সাথে ড্রেনে ময়লা স্তূপ হয়ে থাকলে সঠিক সময়ে পরিষ্কারের খবর থাকে না। ফলে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় এসব ময়লা স্তূপে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মাসে বা সপ্তাহে এক-দুইদিন ফগারমেশিন দিয়ে স্প্রে করতে আসে পৌরসভার লোকজন। কোনো কোনো সপ্তাহে তাও দেখা যায় না। মশার বিচরণ বেশি অলিগলি ও ঘিঞ্জি এলাকায়। কিন্তু মাঝেমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করা হয় প্রধান সড়ক-ড্রেনে গুলোতে।


সোমবার খড়কি অঞ্চলে সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ সড়ক খানাখন্দে ভরা। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ আর ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে। প্রায় সবখানে জমে আছে পানি। আশেপাশে ময়লা আবর্জনা। এ এলাকার বাসিন্দা এখলাস বলেন, রাতে তো মশা আছেই, দিনের বেলাতেও মশা কামড়ায়। এখন তো সব জায়গায় শুনছি ডেঙ্গু আর ডেঙ্গু। সবসময় ভয়ে থাকি। পৌরসভার লোকজন মাঝেমধ্যে ধোয়া দিয়ে যায়। তাও অলিগলিতে আসে না। প্রধান সড়কে দিয়ে চলে যায়। এই ধোয়া দিয়ে কোনো লাভ হয় বলে মনে হয় না।’


একই এলাকার আরেক বাসিন্দা সাইদুর বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় পানি জমে সবসময় স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে। ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। এজন্য বেশি মশা থাকে। এক চা দোকানদার বলেন, দিনের বেলা দোকানে বসলেও মশা কামড়ায়। রাতে তো কয়েল দিয়েও কাজ হয় না।’


যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. সাইবুর রহমান মোল্যা বলেন, যশোর পৌরসভার ড্রেনগুলো বন্ধ অবস্থায় থাকে। পানি সরে না। একই সাথে ড্রেন থেকে নিয়মিত ময়লা পরিষ্কারও করা হয় না। ফলে ড্রেনের মধ্যে পড়ে থাকা ডাবের খোসা ও টায়ারের ভিতরে এডিস মশা ডিম পাড়ে। অন্যদিকে ভৈরব নদীতে স্রোত নেই। ফলে এখানে এডিস মশা একবার ডিম পাড়লেই বংশবিস্তার হয় সহজে।’ এজন্য দ্রুত লার্ভা সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে পরামর্শ দেন তিনি।


যশোর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুন্ডু বলেন, দুইদিন ডেঙ্গু সচেতনতার মাইকিং করা হয়েছে। ফগারমেশিন দিয়ে ধোয়া মারা হয়েছে। জলাবদ্ধতা অঞ্চলে সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে পানি সরানো হচ্ছে। একই সাথে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য ৯ ওয়ার্ডে ২৭টি ওষুধ স্প্রে মেশিন প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মাসিক মিটিংয়ে এডিস মশা নিধনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে কাজ শুরু করা হবে।


যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল পৌরসভা থেকে ওষুধ স্প্রে করা হবে প্রতিটি ওয়ার্ডে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram