ইমরান হোসেন পিংকু : একদিনেই ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে যশোর শহর। শনিবার পরিছন্ন কর্মীরা কাজ না করায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। উপচে পড়েছে ডাস্টবিনগুলো। বিভিন্ন রা¯ত্মার উপরও জমেছে ময়লার স্তুপ। অবশ্য সোমবার আলোচনার আশ্বাসে আজ কাজ করতে রাজি হয়েছে পরিচ্ছন্ন কর্মিরা।
যশোর পৌরসভায় পরিচ্ছন্নকর্মিদের সাথে পৌরকর্তৃপড়্গরে দ্বন্দ্ব পুরোনো। পৌরকর্তৃপড়্গ হরিজনদের পাশপাশি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা কাজ করতে চায়। কিন্তু হরিজনদের দাবি তাদের প্রধান পেশা পরিচ্ছন্নতা। এ কাজে অন্যরা আসলে তাদের ড়্গতি।
এ বিষয়টির সমাধান হচ্ছেই না। দফায় দফায় আলোচনা হলেও বিষয়টি জিইয়ে আছে। গতকাল শনিবার এটি আবার আলোচনায় আসে। কাজ বন্ধ করে দেয় পরিচ্ছন্ন কর্মিরা।
হরিজনরা নেতারা বলছেন, পৌরসভার কাউন্সিলররা হরিজনদের বাদ দিয়ে তারা তাদের মতো লোক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। তাদের বেতন ভাতা ঠিক মতো দেয়া হয় না। এজন্য বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও পৌরসভার কাউন্সিলদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে কাউন্সিলার বলছেন, ঠিক মতো বাসাবাড়ি ময়লা নেয় না হরিজনরা। যে বাড়ির মালিক টাকা বেশি দেয়; সেই বাড়ি ময়লা সংগ্রহ করে। অন্যদিকে বাড়ি মালিকদেরকেও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে হরিজনরা। এজন্য এনজিওকে দেওয়া হয়েছে বাসা বাড়ি ময়লা সংগ্রহের কাজ।
যশোর পৌরসভার হিসেবে ৯ টি ওয়ার্ডে পস্নাস্টিক ডাস্টবিন আছে ২১৭ টি, কন্টিনার ডাস্টবিন ৯০ টি এবং হাউজ ডাস্টবিন ১০ হাজার।
শনিবার শহরের রা¯ত্মা ঘুরে দেখা গেছে, যশোর চাঁচড়া থেকে পালবাড়ি মেইন রোডের পাশের কয়েক জায়গায়, মনিহার ট্রাক স্ট্যান্ড, বিসিএমসি কলেজের পাশে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসের সামনে, ঢাকা রোড বাবলাতলা ব্রিজের পাশে, শংকরপুর চাতাল মোড়ের আশেপাশে কয়েক জায়গায়, চিত্রা মোড়ে, চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ডের পাশে, কারবালা, চাঁচড়া বাজারসহ শহরের বিভিন্ন জায়গার সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। বাসাবাড়ি, খাবারের হোটেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা জমা হয়েছে। আর এসব ময়লা-আর্বজনা পাখি, মুরগি, গরম্ন, ছাগল, কুকুর ছাড়িয়ে-ছিটিয়ে দিচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
কারবালা কবরস্থান মোড়ের বাসিন্দা ও জেলা দলের সাবেক ফুটবলার সোহেল আল মামুন নিশাদ বলেন, দুইদিন ধরে ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। আজকে বলে নয়; মাঝে মাঝে হরিজনরা ময়লা নেয়না। এতে কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
মনিহার ঢাকা রোডে এলাকার ভাড়াটিয়া আমিনুর রহমান বলেন, মণিহারের এই রোডটি খুবই সুন্দর করে নির্মাণ করা হলেও তার সৌন্দর্য ময়লা আবর্জনার কারণে নষ্ট হচ্ছে। এখানে স্থায়ী একটি ডাস্টবিন হলে এভাবে ময়লা আবর্জনা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো না। আর প্রায় দিন দেখা যায় ময়লা আর্বজনা প্রায় দিন অপসারণ করা হয় না। এতে পরিবশ নষ্ট হচ্ছে।
পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মতি লাল বলেন, পৌরসভার কাউন্সিলররা হরিজনদের বাদ দিয়ে তারা তাদের মতো লোক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। তাদের বেতন ভাতা ঠিক মতো দেয়া হয় না। এছাড়াও বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। তাহলে কেন আমাদের বেতন বাড়ছে না। বরং আমাদের বাদ দিয়ে পৌরসভার কাউন্সিলররা তাদের পকেট ভরছে। এজন্য আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। পৌরসভা সময় নিয়েছে সোমববার পর্যšত্ম। যদি দাবি মেনে না নেয়; তাহালে আমরা কঠিন আন্দোলনে যাবো।
৫নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলার রাজিবুল আলম বলেন, ঠিক মতো বাসাবাড়ি ময়লা নেই না হরিজনরা। যে বাড়ির মালিক টাকা বেশি দেয়; সেই বাড়ি ময়লা সংগ্রহ করে। যারা টাকা দিতে পারে না; তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করে তারা। অন্যদিকে বাড়ি মালিকদেরকেও বিভিন্নভাবে হয়রানি করে হরিজনরা। এজন্য এনজিওকে দেওয়া হয়েছে বাসা বাড়ি ময়লা সংগ্রহের কাজ।’
এ ব্যাপারে যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণী খান পলাশ বলেন, শনিবার মিটিং হয়েছে। সোমবার বি¯ত্মারিত জানানো হবে।