১০ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জো বাইডেন
মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিরসনে ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র, পাত্তা দিচ্ছে না ইসরায়েলও

সমাজের কথা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত সতর্ক করে আসছে যে, লেবাননে বোমাবর্ষণ বা স্থল অভিযানের মাত্রা ইসরায়েল বাড়ালে পুরো অঞ্চলজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি বৃহত্তর যুদ্ধও শুরু হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানকে পাত্তা না দিয়ে ইসরায়েল উল্টো তাদের আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।

২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল তীব্র বোমা হামলা শুরু করেছে এবং সোমবার তারা সীমিত স্থল অভিযানও চালিয়েছে। এর ফলে লেবাননে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ, লেবাননের ও ফিলিস্তিনের কয়েকজন নেতা এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একজন শীর্ষ জেনারেলও আছেন।

প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র কেন ইসরায়েলকে এই সংঘাত থেকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হলো? এর চেয়েও বড় প্রশ্ন হতে পারে: যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ ইসরায়েলকে কোনও কিছু থেকে নিবৃত্ত করতে পারে?

ইসরায়েল যে কেবল সংঘাত বাড়িয়ে চলেছে তা নয়। তারা একাধিক ফ্রন্টেও সংঘাত চালাচ্ছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি অবৈধ বসতিরা প্রায় ১ হাজার ৩০০ হামলা চালিয়েছে। সেখানে তারা ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি, ফসল ও সম্পদ ধ্বংস করেছে। কিন্তু তাদের কোনো ধরনের জবাবদিহি করতে হয়নি।

গাজা ও পশ্চিম তীর—এই দুটি অঞ্চলই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। যা জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ মেনে নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের গঠন প্রত্যাখ্যান করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সুস্পষ্ট চ্যালেঞ্জ।

যুক্তরাষ্ট্র যখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখনও ইসরায়েল তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন গাজার জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন, তখনও ইসরায়েল কোনও প্রতিক্রিয়া জানায় না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যখন লেবাননে একতরফা পদক্ষেপ নেওয়ার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক করে, তাতেও ইসরায়েল গুরুত্ব দেয় না।

ইসরায়েল তাদের ইচ্ছামতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। আর এই সংকটের সমাধান বের করার দায় পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওপর। এদিকে, তাদের অস্পষ্ট ও প্রায়ই পরস্পরবিরোধী মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচিত হচ্ছে।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, আমরা কখনও হামাসের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধান চাইনি। তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তাহলে যুদ্ধবিরতির কী হবে? মিলার উত্তরে বলেন, আমি চাই যে হামাস আলোচনার টেবিলে আসুক।

মিলারের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আগের নীতি ও কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ বছরের জুন মাসে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটি আমাদের শর্ত অনুযায়ী হবে এবং আমাদের শর্ত হলো যুদ্ধ শেষ না করা।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। তারা একটি বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে। তবে তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন ওঠছে, যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে ইসরায়েলকে নিরস্ত করতে পারে বা আদৌ পারে কি না?

এটি স্পষ্ট যে, ইসরায়েল নিজের নীতিতে অটল এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। এ পরিস্থিতি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে আরও গভীরতর করছে।

সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram