সমাজের কথা ডেস্ক : প্রয়োজনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপরেও ভিসানীতি প্রয়োগ করা হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে পিটার হাসকে অনুরোধ করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষায় তার দেশের সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর পিটার হাসকে ই—মেইল চিঠি লেখেন মাহফুজ আনাম। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, এই মন্তব্য আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, আমাদের অনুরোধ থাকবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার।’
মাহফুজ আনাম বলেন, যেহেতু মার্কিন সরকার এবং রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে সবসময় স্বাধীন ও স্বাধীন গণমাধ্যমের অবিচল সমর্থক, তাই এই মন্তব্য তাদের বিচলিত করেছে।
ভিসানীতি ‘তাদের কর্ম ছাড়া অন্য কিছুর ওপর ভিত্তি করে নয়,’— মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি বলেন, গণমাধ্যমের কাজ লেখা বা সম্প্রচার করা। একজন সাংবাদিক যা লেখেন বা সম্প্রচার করেন তার ওপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা হবে কি না, সেটিও জানতে চান তিনি।
মাহফুজ আনাম লেখেন, যদি তাই হয়, তাহলে এটা কি ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ এবং ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা’র আওতায় পড়ে না? গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে? কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে?’— চিঠিতে তা জানতে চান তিনি।
<< আরও পড়ুন >> নিষেধাজ্ঞার বিকল্প হাতে রাখে যুক্তরাষ্ট্র : মিলার
মাহফুজ আনাম আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য সবসময় অনুপ্রেরণা ও অনুকরণের উৎস হিসেবে কাজ করেছে। সেক্ষেত্রে ভিসানীতি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলে প্রথম সংশোধনীর মূল্যবোধ কীভাবে প্রতিফলিত হবে?
জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে এবং তাদের জন্য মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগ করবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে উদ্ধৃত উল্লেখ করে পিটার হাস বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের বক্তব্য স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য। এর মধ্যে যারা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে পদক্ষেপ নেয় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।