মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর : মণিরামপুরে তৈরি হচ্ছে আমেরিকা, চীন ও মালয়েশিয়ান ব্র্যান্ডের দস্তা সার। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয় চুন, গোবর ও এঁটেল মাটি। রোববার মধ্যেরাতে মণিরামপুর পৌর এলাকার বাঁধাঘাট এলাকার জরাজীর্ন পরিত্যাক্ত বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
বিদেশি ব্রান্ডের দস্তা তৈরি কারখানা থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেট্রো-ন ১৭-৬০২৯ নম্বারধারি পিকআপ ভর্তি সার। এসময় পুলিশি উপস্থিতি টের পেয়ে পিকআপ চালক, নকল দস্তা সার কারখানায় কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক ওই বাড়িতে তালা দিয়েই সটকে পড়ে।
মিক্সার মেশিনে (ঢালাই কাজে ব্যবহৃত) আঠালো জাতীয় কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল এই সার। স্থানীয়রা জানায়, মুনতাজ আলীর বশিয়ার নামের এক ব্যক্তির পরিত্যাক্ত বাড়িটি মাস খানেক ভাড়া নিয়ে এসব সকল সার তৈরি করা হলেও হলেও তারা কেউ বুঝতে পারেননি।
সাধারনত দিনের বেলায় বাড়িটি তালাবদ্ধ থাকতো। সূর্য্য ডোবার সাথে সাথে অপরিচিত লোকজন ঘরে ঢুকতো, এরমধ্যে চলে আসতো একটি পিকআপ। আবার রাত ১২ টার দিকে পিকআপ ভর্তি করে প্যাকেটজাত দস্তা সার গন্তব্য চলে যেতো।
নকল দস্তা সার বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত হিসেবে নামী-দামী ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করে পরে প্যাকেটজাত করে তা বাজারজাত করা হচ্ছিল। স্থানীয়দের দাবি বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই পাওয়া যাবে কারা বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল।
সোমবার সকালে এ্যাসিল্যান্ড আলী হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীন ইসলামের উপস্থিতিতে ওই বাড়ির তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করেন। এসময় সেখানে নকল দস্তা সার তৈরির চুন, কেমিক্যাল, মিক্সার মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। বাড়িটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীন ইসলাম জানান, নকল সার কারখানায় চুন ভর্তি কয়েকটি বস্তা, আঠালো জাতীয় কেমিক্যালসহ নানা সরঞ্জামাদি উদ্ধার হয়। এতে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে চুন, গোবর ও এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরী হচ্ছিল দস্তা সার। স্যাম্পল ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলেই তৈরির উপকরণ সম্পর্কে জানা যাবে। এই ব্র্যান্ডের দস্তা সার বাজারে তিনশ’ হতে সাড়ে তিনশ’ টাকায় বিক্রি হয় বলেও তিনি জানান।
এ্যসিল্যান্ড আলী হাসান বলেন, পিকআপ ভর্তি দস্তাসহ সরঞ্জাম জব্দ করা ছাড়াও বাড়িটি সিলগালা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।