মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর: শ্লীলতাহানীর অভিযোগে নীহার রঞ্জন রায় নামে এক প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেছেন একই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা। রোববার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটেছে মণিরামপুরের দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে যান। অফিস কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গিয়ে খাতা না পেয়ে ওই শিক্ষক পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেন। দুপুর ১টার দিকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক পর্যায় শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে যান হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে। এ সময় টেবিলে খাতা না পেয়ে প্রধান শিক্ষককের কাছে খাতা চাইলে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায় ওই শিক্ষিকার গায়ের ওড়না ধরে টান দেন। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষিকা পায়ের জুতা দিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারপিট করেন।
ওই শিক্ষিকার দাবি, প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন রায় তাকে বহুদিন ধরেই কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক। গতকাল পরীক্ষা গ্রহণ শেষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে অফিস কক্ষে কেউ না থাকার সুযোগে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায় ওই শিক্ষিকার গায়ের ওড়না ধরে টান দেন। এসময় রাগে-ক্ষোভে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেছেন বলে ওই শিক্ষিকা জানান।
তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকা- কমিটিকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে রক্ষা পেতে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালকসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিস্থির সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে মণিরামপুর থানা থেকে পুলিশ উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাথে মতবিনিময় করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে একটি ফোন পাওয়ার পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনিছুর রহমান তজু জানান, বিষয়টি নিয়ে কমিটি আগে বসাবসি করবে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায়ের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, তিনি খবরটি শুনেছেন, তবে সোমবার সরেজমিন ওই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাবেন।