নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর (যশোর) : যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মিনহাজুল আবেদীনের ঝুলšত্ম লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যরা তার নিজ ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন। মিনহাজুল ঘরের ফ্যানের সাথে মাফলার জড়িয়ে আত¥হত্যা করেছেন বলে দাবি স্বজনদের।
মিনহাজুল আবেদীন মণিরামপুর উপজেলার সালামতপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক ফারম্নক হোসেনের ছেলে। তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গণিত বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস বিষয়ক সংগঠন ‘রোবোআড্ডা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ১৫-১৬ দিন আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মণিরামপুরের গ্রামের বাড়িতে আসেন। মিনহাজুল আবেদীন তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়।
এদিকে খবর পেয়ে মণিরামপুর থানার পুলিশ এদিন দুপুরে মিনহাজুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদšেত্মর জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।
মিনহাজুলের বাবা ফারম্নক হোসেন বলেন, ছেলে সব সময় রোবট নিয়ে গবেষণা করত। সে রাতে ঘুমাতো না। জেগে জেগে কাজ করত। ভোর হলে ঘুমাত। রোবট বলতে বলতে সে মানসিক রোগী হয়ে যায়। আমরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েছি। ও এবার অনার্স শেষ বর্ষে পরীক্ষা দিয়ে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিল।
ফারম্নক হোসেন আরো বলেন, বুধবার রাতে খাবার খেয়ে ও নিজ ঘরে দরজা দিয়ে অনলাইনে মিটিং করছিল। এটা দেখে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। ভোরে উঠে আমার স্ত্রী ছেলের ঘরে আলো জ্বলতে দেখেন। তখন তিনি জানলা দিয়ে দেখতে পান ছেলে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। এরপর দরজা ভেঙে আমরা তার লাশ উদ্ধার করি।
খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমেন বিশ্বাস বলেন, মিনহাজুল আবেদীনের আত¥হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের জানিয়েছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০জন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন।
এরমধ্যে মিনহাজুলের নাম ছিল। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে তিনি যেতে পারেননি। অতি মেধাবী হওয়ায় রোবট নিয়ে কাজ করতে যেয়ে তিনি মানসিক রোগী হয়ে গেছেন। এর আগেও তিনি একাধিকবার আত¥হত্যার কথা বলেছেন। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার বাবা-মাকে সতর্ক করেছিলেন। এছাড়া পরিবারের সাথে তার কোন ঝগড়া-বিবাদ ছিল না।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরম্নজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আত¥হত্যার প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হামিদুল হক শাহীন বলেন, আšত্মর্জাতিক রোবট অলেম্পিক প্রতিযোগিতায় মিনহাজুল আবেদীন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম রানারআপ হয়েছিল।
রোবটকে কিভাবে মানব কল্যাণে কাজে লাগানো যায়, শিক্ষার্থীদের কিভাবে বিজ্ঞান মনস্ক করা যায় সেজন্য প্রতি জেলায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেমিনার করত। সেমিনারের মধ্যদিয়ে তার সাথে আমার পরিচয়।
তিনি বলেন, মিনহাজুলের মৃত্যুর খবর আমাকে ব্যথিত করেছে। তার এভাবে চলে যাওয়ায় দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।