নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর ও ঝিকরগাছা পৌর প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুরে সড়কের পাশে মিলল আক্তারুল ইসলাম (৩৫) নামে যুবকের মরদেহ। গতকাল বুধবার রাত তিনটার দিকে মনিরামপুরের দিঘিরপাড়-দোদাড়িয়া সড়কের পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়। প্রতক্ষ্যদর্শিরা লাশের ডান চোখ, ঘাড় ও থুতনির নিচে আঘাত চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন।
বুধবার শ্বশুরবাড়ির দায়েরকৃত মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় বলে স্বজনরা দাবি করেছে। আক্তারুল ইসলাম ঝিকরগাছা উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খোশালনগর গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে। নিহতের স্বজনরা ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করছে। তবে, পুলিশ ময়না তদন্ত ছাড়া মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে বাড়ি ফিরে বছর পাঁচেক আগে মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে নাসরিন খাতুনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আক্তারুলের। তাজিম নামে তাদের তিন বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে।
নিহত আক্তারুল ইসলামের ভাই ফারুক হোসেন বলেন, সংসারে কোন দিক থেকেই অভাব-অনটন নেই। তারপরও নিহত আক্তারুলের সাথে স্ত্রী নাসরিনের বিবাদ লেগেই থাকতো। এক পর্যায় গেলো বছর নাসরিন শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাবা বাড়ি চলে গেলে উভয় পরিবারের অভিভাকদের বসাবসির পর নাসরিনকে ফিরিয়ে আনা হয়। কিছুদিন পর ফের বাবা বাড়ি চলে যায়।
গত দুই মাস আগে তার শাশুড়ী সুফিয়া বেগম বাদি হয়ে যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে আক্তারুলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে। মামলায় হাজিরাও দিয়েছে আক্তারুল। গেলো সপ্তাহে শ্বশুর বাড়ি হতে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে মর্মে ফের অভিযোগ এনে আক্তারুলের নামে আদালতে মামলা হয়। যার তদন্তভার পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) দেয়া হয়েছে।
এ মামলায় প্রাথমিক তদন্তের জন্য ডাকা হলে বুধবার সন্ধ্যার পর আক্তারুল ইসলাম, বড় ভাই নজরুল ইসলাম ও ভগ্নিপতি আজিজুর রহমান পিবিআই কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে এক সাথে বের হলেও আক্তারুল একটু দ্রুত মোটরসাইকেল চালায়। কিন্তু রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করে। আক্তারুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে রিং হলেও তা রিসিভ হয়নি। স্বজনরা খোঁজাখুজির এক পর্যায় বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সড়কের পাশে আক্তারুলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান। পাশেই পড়েছিল আক্তারুলের মোটরসাইকেল।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে সহকারি পুলিশ সুপার আশেক সুজা মামুন,ওসি মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, মৃত্যুর কারন ময়না তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।