মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরে পাঁচজনকে চাপা দিয়ে ‘হত্যা করা’ কাভার্ডভ্যানটি চালাচ্ছিলেন মাত্র ২০ বছর বয়সী চালক আলমগীর হোসেন। পাশে ছিলেন ১৯ বছর বয়সী হেলপার আনোয়ার হোসেন। ঘুমের ঘোরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক আলমগীর এই দুর্ঘটনা ঘটান বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। ওই দুর্ঘটনায় কাভার্ডভ্যান চাপায় ঝরে যায় ৫টি তরতাজা প্রাণ। মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন সকালে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলা জয়না বাজারের তরমুজ পাড় এলাকা থেকে চালক ও হেলপারকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেফতার চালক আলমগীর হোসেন নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানার মোবারকপুর গ্রামের শামছুল হকের ছেলে এবং হেলপার আনোয়ার হোসেন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার সন্ধ্যাকুরা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরম্নজ্জামান জানান, কাভার্ডভ্যান চাপায় নিহতের ঘটনায় মামলার পর থেকে পুলিশ ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণাসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায়। অভিয়ানের এক পর্যায়ে তারা আটক হন। তাদের আটক করে মঙ্গলবার বিকেলে মণিরামপুর থানায় আনা হয়।
কাভার্ডভ্যান চালক আলমগীর হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থেকে কাভার্ডভ্যানে বিস্কুট নিয়ে তারা সাতড়্গীরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কাভার্ডভ্যান রাজারহাট-চুকনগর সড়কে প্রবেশ করলে চালক আলমগীর হোসেনের চোখে ঘুম চলে আসে। চালকের পাশেই হেলপার আনোয়ার হোসেন তখন ঘুমিয়েই ছিলেন। ঘুমের মধ্যে কাভার্ড ভ্যানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক আলমগীর হোসেন। এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রনহীন কাভার্ডভ্যান রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়কের যশোরের মণিরামপুরের ব্যাগারিতলা বাজারে খাবার হোটেলে ঢুকে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার যশোর থেকে সাতড়্গীরাগামী কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্যাগারিতলা বাজারে মহাসড়কের পাশে খাবার হোটেলে ঢুকে পড়ে। এসময় নাশতা সেরে চা পান করতে দোকানের খাটে বসেছিলেন টুনিয়াঘরা গ্রামের শামছুর রহমান, তৌহিদুল ইসলাম ও জয়পুর গ্রামের জিয়াউর রহমান। এই তিনজনই ঘটনাস্থলে প্রান হারান। একই সময় নাশতা খেতে টুনিয়াঘরা গ্রামের পিতা হাবিবুর রহমান ও তা ৬ বছরের ছেলে তাওহীদ হাবিব তাওসিকে নিয়ে হোটেলে যাচ্ছিলেন। কাভার্ডভ্যান চাপায় তারাও প্রাণ হারান।