৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মণিরামপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০ ঘর পুড়ে ছাই
মণিরামপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০ ঘর পুড়ে ছাই

মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর : ‘হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে খাইয়ে না খাইয়ে টাকা জমাইয়ে দু’টো বাছুর কিনিলাম, ওই গরম্ন বিক্রির দুই লাখ টাকা ঘরের বাক্সে ছিল। এই টাহা দিইয়ে ইবার জমি রাখতি (বন্ধক) চাইলাম। আগুনে সব শেষ করে দিলো। বিলাপ করে কথাগুলো বলছিলেন যশোরের মণিরামপুরের গোবিন্দপুর আশ্রয় প্রকল্পের বাসিন্দা ফিরোজা বেগম।’ শুধু টাকা নয়; ঘরে থাকা সবকিছুই আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে।


শুধু ফিরোজা বেগম নন; মাছুদ গাজী, বিউটি বেগম, রনি মিয়াসহ আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০ ঘরের বাসিন্দার সব কিছুই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রাতের খাবার রান্নার কোন কিছুই আগুনের লেলিহান শিখা হতে রক্ষা পায়নি। এমনকি পরনেরও কিছুই ঘরে অবশিষ্ট নেই।


রোববার বিকেল ৫টার দিকে মণিরামপুরের আশ্রয়ন প্রকল্পের সোহেল নামের এক বাসিন্দার ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহূর্তেই পাশের ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চারিদিক কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এসময় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো গোবিন্দপুর গ্রাম। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোবিন্দুপর গ্রামে বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি।


খবর পেয়ে মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘন্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। কিন্তু ততক্ষণ আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা ১০ দরিদ্র পরিবারের সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন থেকে ঘরের কোন কিছুই রক্ষা পায়নি। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে, ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি তাদের কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান, মণিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরম্নজ্জামান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। উপজেলা প্রশাসনের পড়্গ থেকে তাৎড়্গণিক ড়্গতিগ্র¯ত্ম প্রতি বারের মাঝে দুই হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রতি পরিবারের মাঝে ৫শ’ টাকা প্রদান করেন।


ড়্গতিগ্র¯ত্ম সোহেল জানান, তার মা ফিরোজা বেগম দুপুরের পর ঘর তালাবদ্ধ করে খালা ফতেমার বাড়িতে বেড়াতে যান। তালাবদ্ধ ঘরেই আগুন লাগে। এরপর তা দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। শত চেষ্টার পরও ঘরে থাকা আসবাবপত্র, থালা-বাসন, কাপড়-চোপড় কিছুই রক্ষা করতে পারেননি তারা। এমনকি ঘরে থাকা গরু বিক্রির নগদ দুই লাখ টাকাও পুড়ে ছাই হয়েছে।


মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস জানান, বিকেল ৫টা ২০ মিনিট হতে সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিট পর্যন্ত চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। আগুনে পোড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো হলো বারেক মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন, ইমাম হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম, নিজাম মল্লিকের ছেলে রনি মিয়া, বেলায়েত হোসেনের ছেলে আবুল কাশেম, আলম বিশ্বাসের ছেলে সোহেল মিয়া ও তার ফিরোজা বেগম, মোসলেম পাটোয়ারির দুইটি ঘর, তরিকুল ইসলামের ছেলে মাছুদ গাজী ও তরিকুল ইসলাম।


সূত্র জানায়, আগুনে ফিরোজা বেগমের দুই গরু বিক্রির দুই লাখ টাকা, মোসলেমের গরু বিক্রির এক লাখ টাকা এবং আবুল কাশেমের ঘরে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা পুড়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থ প্রতি পরিবারের হাতে নগদ দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আজ রাত (রোববার), পরদিন সোমবার ক্ষতিগ্রস্থদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
Fri Sat Sun Mon Tue Wed Thu
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram