নিজস্ব প্রতিবেদক : রংপুর থেকে যশোর মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নি করতে আসা এক ইন্টার্ন চিকিৎসেকর হাত পা ভেঙ্গে গোপনে চিকিৎসা দিয়েছে মেডিকেল ছাত্ররা।
যশোর মেডিকেল কলেজের ছাত্রবাসের ১০৪ নম্বর কক্ষে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেন গুরম্নতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে আহতের বড়ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি পুলিশ তদšত্ম করে মামলা হিসাবে পরবর্তীতে গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় যশোর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদšত্ম কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আহত জাকির হোসেন রংপপুরের কাউনিয়া উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের মৃত সুরম্নজ জামানের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক মেহেদী হাসান লিয়ন, শামীম হাসান, আব্দুর রহমান আকাশ, সাকিব আহমেদ তানিমসহ আরো ৩-৪ জন ছাত্রবাসের ১০৪ নম্বর কক্ষে প্রতিনিয়ত মাদকের আড্ডা বসান।
রাতভর চিৎকার চেঁচামেচি করেন। ওই রম্নমের পাশেই তার রম্নম। এ কারণে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে, তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করেন। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টায় তারা তার রম্নমে প্রবেশ করে হকিস্টিক ও জিআই পাইপ দিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করেন।
রাত ১১টা পর্যšত্ম মারতে থাকেন তাকে। এক পর্যায়ে তার ঘর থেকে নগদ টাকা, মানিব্যাগ ও মোটরসাইকেল নিয়ে যান তারা। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অপর একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীদের অধিকাংশই ইন্টার্ন। তাদের লেখাপড়া শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। তারপরও তারা ছাত্রবাসে সিট নিয়ে থাকছেন। বিষয়টি স্বীকারও করেছে কলেজ প্রশাসন।
আহতের বড়ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাইকে পড়াশোনা করার জন্য যশোর মেডিকেলে ভর্তি করেছিলাম। এখন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার দুই পা ও একহাত হকিস্টিক দিয়ে ভেঙে দিয়েছে।
তাছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারধরের চিহ্ন রয়েছে। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কলেজ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সঠিক বিচার কামনা করছি।
এদিকে মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় কলেজ প্রশাসন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুর কুতুউল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদšত্ম কমিটি গঠন করেছে। আগামি রোববারের মধ্যে কমিটিকে তদšত্ম রির্পোট জমার নির্দেশ নিয়েছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুর রহমান।
তিনি জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। তিনি জাকিরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। জাকিরের হাত ও পা ভেঙেছে। বুকের হাড়েও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদšত্ম কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রম্নতই অপরাধীদের বিরম্নদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, অনেকেই পড়াশোনা শেষ হলেও ছাত্রাবাসে রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় তাদের নামিয়ে দিতে পারি না।
এই বিষয়ে তদšত্ম কমিটির সদস্য ও সহকারী হোস্টেল সুপার ডা. ফয়সাল কাদির শাওন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। ইতোমধ্যে আহত ইন্টার্নকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তদšত্ম চলমান। দ্রম্নতই তদšত্ম রির্পোট জমা দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, থানায় অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদšত্ম করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।