১৮ই এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের উল্লাস।
ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক : সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে টাইব্রেকারে ৪–৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ১–১ গোলে ড্র ছিল। ম্যাচ শুরুর পর প্রথম ১৫ মিনিট ছিল ভারতের পরিষ্কার প্রাধান্য। এ সময় ভারতের ফরোয়ার্ডরা বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশের বক্সে আক্রমণে উঠেছেন। গোলের সুযোগও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সে যাত্রায় কোনো বিপদ হয়নি। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২০ দলের রক্ষণভাগ ভারতের আক্রমণগুলো বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছে। শাকিল আহাদ তপু, রোস্তম দুখু মিয়া, কাঞ্চন মারমা আকিদের সঙ্গে ছিলেন গোলকিপার ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান।

বাংলাদেশ আক্রমণে ওঠে ১৫ মিনিটের পর থেকে। বেশির ভাগ আক্রমণই বাংলাদেশ করেছে বাঁ প্রান্ত দিয়ে। রাব্বি হোসেন রাহুল আজ সত্যিই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতের রক্ষণভাগের সামনে। ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশ গোল করে এগিয়ে যায় এই রাহুলের দুর্দান্ত একটা আক্রমণ থেকেই। বাঁ প্রান্তে বল ধরে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে তিনি বোকা বানান ভারতের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে। এরপর বক্সের মধ্যে ক্রস ফেললে তা থেকে গোল করেন আসাদুল মোল্লা। এগিয়ে যাওয়ার পর প্রথমার্ধের বাকিটা সময় বাংলাদেশেরই প্রাধান্য ছিল। দারুণ ফুটবল খেলেও এ সময় গোলের পরিষ্কার সুযোগ অবশ্য তৈরি করতে পারেনি। প্রথমার্ধে স্কোরলাইন ছিল ১-০।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য শুরু থেকেই লাগাম টেনে নেয় ভারত। বাংলাদেশকে মনে হচ্ছিল বেশ ছন্নছাড়া। একাদশে পরিবর্তন এনে ভারত শুরু থেকেই আক্রমণে তীব্রতা আনে। একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করে। এ সময় বাংলাদেশ একাধিক গোল হজম করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। ৫০ মিনিটে কেলভিনের থ্রু থেকে বল ধরে মাংলেথান কিপজেন বাংলাদেশের গোলকিপার মেহেদীকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। এর দুই মিনিট পর বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় বল পেয়ে মিস করেন করু সিং। ৫৬ মিনিটে ভারত আরও একটি সহজ সুযোগ পায়, কিন্তু তা থেকে গোল করতে পারেননি কেলভিন। ৬২ মিনিটে থাংলাসুন গানতের শট বারে লেগে ফিরে আসে। ৬৫ মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে বাংলাদেশকে বাঁচান আসাদুল তপু। তবে এই আক্রমণে বাংলাদেশের অধিনায়ক ও গোলকিপার মেহেদী মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে মাঠ থেকে উঠে যেতে হয় তাঁকে। পরে মেহেদীকে হাসপাতালেও নিতে হয়েছে চিকিৎসার জন্য।

মেহেদীর জায়গায় মাঠে নামা মোহাম্মদ আসিফকে এ সময় বড় পরীক্ষাই দিতে হয়েছে। ম্যাচের লাগাম তখন পুরোপুরি ভারতের হাতে। ৬৪ মিনিটে ভারত সমতা ফেরায় অধিনায়ক রিকি মিতি হুবামের গোলে। একটি সম্মিলিত আক্রমণে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা বল ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে রিকি বাঁ পায়ের শটে গোল করেন।

১-১ সমতার পরে ভারতই বেশি আক্রমণে উঠেছে। বাংলাদেশের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই এলোমেলো হয়ে পড়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই ছিল একই রকম। মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত কিছু আক্রমণে উঠলেও বেশির ভাগ সময়ই ভারতের আক্রমণ ঠেকিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের যোগ করা সময়ে রাহুলের কর্নার থেকে ভারতের বক্সে সৃষ্ট জটলার মধ্যে ভারতের গোলকিপারকে ধাক্কা মেরে লাল কার্ড দেখেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডার মারমা। ১-১ সমতায় শেষ হয় সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল।

সাফের বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অতিরিক্ত সময়ের খেলা নেই। তাই সরাসরি টাইব্রেকারই শুরু হয়। পেনাল্টি শুট আউটের প্রথম শটটিই মিস করেন ভারতের থাংলাসুন গানতে। যে গোলকিপারের আজ খেলারই কথা ছিল না, সেই আসিফ গানতের নেওয়া শটটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন। এরপর বাংলাদেশের পক্ষে পরের চারটি শটেই গোল করেন পিয়াস আহমেদ নোভা, মঈনুল ইসলাম, শাকিল আহাদ তপু ও আশরাফুল হক আসিফ। ভারতের পক্ষেও গোল করেন পরমবীর, গোয়ামসার গোয়ারি ও মনজিৎ সিং। কেলভিন সিংয়ের শেষ শটটিও আসিফ ঠেকালে বাংলাদেশের যুবাদের শেষ শটটি নিতে হয়নি। ৪-৩ গোলে জিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক নেপালের।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram