সমাজের কথা ডেস্ক : আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়ে প্রায় দুই বছর পর বোমা ফাটালেন মুশফিকুর রহিম। তিনি ইঙ্গিত দিয়ে জানান, বাধ্য হয়েই ছেড়েছেন ফরম্যাটটি। গতকাল তার ব্যাটে ভর করেই রংপুর রাইডার্সকে বিদায় করে চলমান বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে ফরচুন বরিশাল। ম্যাচ জিতে সংবাদসম্মেলনে এসে একের পর এক সমালোচনার জবাব দিয়েছেন এই তারকা।
এবারের ফরচুন বরিশালকে অনেকে ‘বুড়োদের দল’ বলেছেন। এবার তাদেরও এক হাত নিয়েছেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তার দাবি, তরুণ ক্রিকেটারের ফিটনেসের চেয়েও তার ফিটনেস ভালো।
এছাড়া সম্প্রতি বিপিএলের মান নিয়ে কথা বলা জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকেও ছাড়েননি মুশফিক। কড়া সমালোচনা করেছেন ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সেই পোস্টে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের হয়ে অন্য দুই সংস্করণ টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনোযোগ দেওয়ার জন্যই টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মুশফিক।
তবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়লেও ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ঠিকই খেলে যাচ্ছেন মুশফিক। এমনকি এই ফরম্যাটে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও বেশ ভালো। অবসরের পর মুশফিক এরপর দুটি বিপিএল খেলেছেন। দুটিতেই তিনি দুর্দান্ত। গতবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের ফিনিশারের ভূমিকায় খেলে ১৫ ইনিংসে তাঁর রান ৩৫৭, গড় ৩৯, স্ট্রাইক রেট ১৩২। এবার ১৪ ইনিংসে মুশফিকের রান ৩৩ গড় ও ১২৩ স্ট্রাইক রেটে ৩৬৭। গতবারের মতো এবারও তার দল বিপিএলের ফাইনাল খেলছে।
শুধু এই দুই বিপিএল নয়, বাংলাদেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় মুশফিক বরাবরই ‘হাই স্ট্রাইক রেট-হাই অ্যাভারেজ’ ব্যাটসম্যান। সবচেয়ে বেশি ১২৫ ম্যাচ খেলা মুশফিকের ৩২৪৯ রান তামিম ইকবালের (৩৩৮৩) পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দুই হাজারের বেশি বিপিএল রান ও ১৩০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে মুশফিকের (১৩২) আগে শুধু একজনই, তিনি সাকিব আল হাসান (১৩৯)।
তবে আমিরাতের সেই এশিয়া কাপের দলে মুশফিককে সুযোগ দেওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। এশিয়া কাপের আগে ও পরে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষ, এমন গুঞ্জনও শোনা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই তুঙ্গস্পর্শী সময়ে চারপাশে ভারী দেয়াল তুলে রাখলেও বাইরের আওয়াজ কানে আসবেই। মুশফিক যেতে যেতে সে সময়ের কথাটাই হয়তো মনে করিয়ে দিলেন। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে মুশফিকের বাধ্য হয়ে বিদায় জানানোর কারণও হয়তো সেটিই।
মুশফিকের ফিটনেস নিয়ে তো কখনই প্রশ্ন ছিল না। এমন ক্রিকেটারকে বাংলাদেশ নিশ্চয়ই টি-টোয়েন্টি দলে পেতে চাইবে? কিন্তু এই প্রশ্নেও মুশফিকের কাটখোট্টা জবাব, ‘এটা তো এখন ভালো খেলার পর বলছেন। আগে তো কেউ এটা বলেননি।’ এরপর করলেন, ‘আমি শুধু একটা প্রশ্ন করি, আমি কি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছি নিজের ইচ্ছায়? এতটুকু শুধু বলার আছে।’
মুশফিক আবার বললেন, ‘যখন অবসর নিয়েছিলাম, তার আগের এক মাস একটু দেখে নিয়েন। আর কিছু বলার নেই।’"