ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি : চিকিৎসা সহায়তা জোগাড় করতে বন্ধু ছুটছে দিক বিদিক। রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন পত্রে সুপারিশ করেন ¯’ানীয় সংসদ সদস্য। অর্থের একটি বড় জোগান পাবে এ আশায় ফুলতলা শহীদ আসাদ-রফি গ্রš’াগারে বসে বন্ধুরা যখন নতুন পরিকল্পনা করছে সেই সে সময় খবর আসে খুমেক হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে সুমন। রোববার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে ফুলতলা উপজেলা সংলগ্ন সরকারি গোর¯’ানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
বিয়াল্লিশ বছর বয়সী সদা হাস্যোজ্জল সুঠামদেহী যুবক মোঃ ইদ্রিস সরদার ওরফে সুমন উপজেলার দামোদর গ্রামের দমোকপাড়া মাঠসংলগ্ন মৃতঃ ইউনুছ সরদারের পুত্র। কিডনী বিকল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। আজ (সোমবার) কিডনী প্রতি¯’াপনের জন্য রাজধানীর সিকেডি হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল তার। একমাত্র বড় বোন অন্ধ রেহেনা বেগম (৪৮) তার ১টি কিডনী ¯েœহের ভাই সুমনকে দান করে তার চোখে পৃথিবীর আলো দেখবেন তিনি। কিš‘ বিধির লিখন না যায় খন্ডন। বোনের স্বপ্ন পুরনের দুদিন আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমাতে হয় সুমনের।
তিন বছর বয়সে পিতা এবং তার অল্পদিনের ব্যবধানে তার মাকে হারিয়ে এতিম হয়ে পড়েন সুমন। কখনও চাচা কখনও বা খালা-খালুর তত্বাবধায়নে বড় হতে থাকেন তিনি। ১৯৯৭ সালে দামোদর এমএম হাইস্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করে ভাগ্যান্বেষনে রাজধানীতে পাড়ি জমান সুমন। অনেক চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে শেষটায় গ্রামীন ফোনে চাকুরী জোটে তার।
পরবর্তীতে ফুলতলা ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে বিয়ে করেন তিনি। কোল আলো করে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানও আসে তাদের ঘরে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি হঠাৎ অসু¯’ হয়ে পড়েন সুমন। চলতে থাকে চিকিৎসা। গত বছরের প্রথম দিকে পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পড়ে তার দুটি কিডনীই বিকল। চাকুরীও চলে যায় তার। এককালীন ৮ লাখ টাকা দিয়ে কর্ম¯’ল থেকে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় বাড়িতে। শারিরীকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে থাকেন তিনি। অন্যদিকে তাকে ছেড়ে একমাত্র কন্যাসহ স্ত্রী থেকে যান পিত্রালয়ে।
অসহায় এতিম সুমনের জায়গা হয় অন্ধ বোনের বাড়িতে। নিজের মটর সাইকেল বিক্রি ও আতœীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবের সহায়তায় চিকিৎসা ও ডায়ালসিস চলতে থাকে।