সমাজের কথা ডেস্ক : লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। আজ শনিবার দেশটির রাজধানী বৈরুতের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়। এর মধ্যে বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে একটি আবাসিক ভবনে হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ ভোরে বৈরুতের মধ্যাঞ্চলীয় বাসতা এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার আগে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়নি। এদিন সকালে বৈরুতের উত্তর উপকণ্ঠের হাদাথ এলাকাতেও বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৬৩ জন।
ইসরায়েলের একের পর এক বোমা হামলার মধ্যে ঘুমন্ত নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাসতার যে আবাসিক ভবনে হামলা হয়েছে, তার পাশের একটি ভবনের বাসিন্দা সামির। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি বলেন, ‘হামলা এত শক্তিশালী ছিল যে মনে হচ্ছিল, ওই ভবন ধসে আমাদের মাথার ওপর এসে পড়বে।’ হামলার মুখে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে ভোররাতে বাসা ছেড়ে পালান বলে জানান তিনি।
লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, আবাসিক ওই ভবনে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে পুরো ভবন ধসে পড়েছে। ছিন্নভিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে ধ্বংসস্তূপের ভেতর। অন্তত ১১ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। উদ্ধার অভিযান শেষে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাবে, গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় দেশটিতে অন্তত ৩ হাজার ৬৪৫ জন নিহত হয়েছেন।
ধুঁকছে গাজার হাসপাতালগুলো
ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান ও স্থল হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গতকাল ভোরে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণে অন্তত ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত ৪০ জনের বেশি। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজার অন্তত ৪৪ হাজার ৫৬ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার মুখে গাজার স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলোয় ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জ্বালানির ব্যাপক সংকট চলছে। এর মধ্যে অনেক হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা।
গাজার ফিল্ড হাসপাতালগুলোর পরিচালক মারওয়ান আল–হামস গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সব হাসপাতাল আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অচল হয়ে যাবে, নয়তো সেবাদানের ব্যবস্থা একেবারের তলানিতে নেমে আসবে। এর কারণ হিসেবে জ্বালানি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের বাধার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।