১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
যশোরে আমন আবাদে বাড়তি ব্যয় হবে ২০৭ কোটি টাকা
বৃষ্টিহীন বর্ষায় যশোরে আমন আবাদে বাড়তি ব্যয় হবে ২০৭ কোটি টাকা

ইমরান হোসেন পিংকু : আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে যশোরের আমন চাষিরা। আমন চাষের ভরা মৌসুমেও ধানে চারা রোপন করতে পারছেন না চাষিরা। বৃষ্টি নির্ভর আমন চাষে এবার বাধ্য হয়ে কৃষককে ব্যবহার করতে হচ্ছে সেচযন্ত্র। ফলে শুরুতেই বেড়েছে চাষের খরচ। অন্যদিকে, ঠিক মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার সেচ খরচে বাবদ কৃষককে অতিরিক্ত গুনতে হবে ২০৭ কোটি ৯৪লাখ ৪০হাজার টাকা।


কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, যশোরের আট উপজেলার কৃষক এবার খরার কবলে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই আমন চাষিরা গভীর-অগভীর সেচযন্ত্র চালু করে আমনের চারা লাগাচ্ছেন। কিন্তু পানিরস্তর নিচে চলে যাওয়ায় ঠিক মতো সেচযন্ত্রে পানি উঠছে না। নিদিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে জমিতে পানি দিয়ে কাদা করতে হচ্ছে। ফলে আমন রোপনের শুরুতে খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে, কৃষকদের হিসাব অনুযায়ী এক বিঘা জমিতে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি দিতে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। ফলে ১০লাখ ৩৯হাজার ৭২০ বিঘা জমিতে কমপক্ষে ২০৭ কোটি ৯৪লাখ ৪০হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে এক মৌসুমে।


যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে।


যশোর জেলা বিএডিসি (সেচ) তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল আল রশিদ বলেন, বৃহত্তর যশোর জেলাতে সেচের জন্য ডিপ টিউবওয়েল (বিদ্যুৎ এবং ডিজেল চালিত) রয়েছে ১৭৩০টি, স্যালো টিউবওয়েল এক লাখ ৬১হাজার ৬১৫টি, পাওয়ার পাম্প দুই হাজার ২৮৬টি। সব মিলিয়ে জেলায় এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৬৭টি সেচযন্ত্র রয়েছে। খরা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রের প্রায় সবগুলোই চালু রয়েছে।’


চৌগাছা উপজেলার শিমুল বলেন, ভরা আমন মৌসুমেও কোন বৃষ্টি নেই। খরার কারণে চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা জমির মাটি ফেঁটে যাচ্ছে। যেসব জমিতে চারা লাগানো হয়েছে সেই সব জমিতে পানি দিতে হচ্ছে নিয়মিত। আবার মাটি ফেঁটে যাওয়ায় জমিতে পানি বেশি দিতে হচ্ছে। যেখানে আমন মৌসুমে পানি জন্য খরচ হতো না; এবার শুরুতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।


মণিরামপুরের খেদাপাড়া মাসুদ রানা বলেন, ১০বিঘা জমিতে ধান চাষ করবো বলে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সেই অনুপাতে চারাও তৈরি করেছি। কিন্তু বৃষ্টি পানি না হওয়া খরচ বেড়েছে। হয়তো ১০বিঘা ধানের লাগানো হবে না।’
ঝিকরগাছার আজিম, বাবলু ও তোফাজ্জেল বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণে ঠিক মতো বৃষ্টি নেই। সেচ দিয়ে ধান লাগাতে হচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বৃষ্টি নেই চিন্তায় করা যায় না। এ রকম খরার কারণে ধান আবাদ করতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এবার বিঘাপ্রতি জমিতে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা খরচ হবে।


যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, বৃষ্টি না হলেও আমনের লক্ষ্যে মাত্রা অর্জন নিয়ে তেমন চিন্তার কিছু নেই। মৌসুম শুরু হয়েছে। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত আমনের চারা লাগানো যাবে। চাষিরা সঠিক সময়েই আমনের চারা লাগানো সম্পন্ন করতে পারবে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ ব্যয় বেড়ে যাবে কৃষকদের।’

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram