সমাজের কথা ডেস্ক : খুলনার পাইকগাছায় মেয়েসহ স্ত্রীকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে ছেলের নামে লিখে দেওয়ায় পিতার দাফন আটকে দেয় মেয়েরা। এ পরিস্থিতিতে বাবার দাফনের ব্যবস্থা না করেই স্ত্রী—সন্তানদের নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায় ছেলে। খবর পেয়ে পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে মরদেহ দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার গদাইপুরের ঘোষাল এলাকার সওকাত গাজী কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মরা যান। তিনি শরিক হিসেবে ৫ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ স্ত্রীকে রেখে যান। তবে তিনি অসুস্থ হলে তার ছেলে মামুন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে সকলের হক বঞ্চিত করে সমুদয় সম্পত্তি পিতার থেকে কৌশলে লিখিয়ে নেন। আর এই ঘটনাটি স্বজনদের অজানা ছিল। মরদেহ গোসল করাতে নিলে নিহত সাকাত গাজীর হাতের বুড়ো আঙ্গুলে কালির ছাপ দেখা যায়। সম্পত্তি লিখে নেওয়ার ঘটনা আঁচ করতে পেরে নিহতের ৫ মেয়ে পিতার মরদেহ দাফনে বাধা দেন। আর শরিক ফাঁকি দেওয়ায় স্থানীয়রাও নিহতের জানাজা পড়বে না বলে সিদ্ধান্ত নেন।
ফলে মঙ্গলবার থেকে দুদিন মরদেহ বাড়ির উঠানেই পড়ে ছিল।
এ ঘটনা জানাজানি হলে বাড়িতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ অবস্থায় গত বুধবার সন্ধ্যায় মামুন বাবার মরদেহ ফেলে রেখেই বাড়ি থেকে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে চলে যান। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে মরদেহ দাফন করা হয়।
নিহত সওকত গাজীর মেয়ে লাবনী আক্তারসহ ভুক্তভোগীরা জানান, বাবার অসুস্থতার সুযোগে চিকিৎসার নামে তাদের ভাই মামুন কাউকেই কিছু না জানিয়ে সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে। যার ফলে বাবার মরদেহ দাফনে তারা বাধা দিয়েছিল।
স্থানীয় ঘোষাল জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন বলেন, সওকত গাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে মঙ্গলবার বাদ জোহর জানাজার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে মৃতের ৫ মেয়ে এসে তাদের জমির হক বঞ্চিত করায় জনাজা এবং মরদেহ দাফনে বধা দেয়। ফলে মুসল্লীসহ গ্রামবাসী জানাজার নামাজ না পাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হক বঞ্চিত মেয়েদেরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে মেয়েরা চাইলে তাদেরকে সার্বিক আইনি সহযোগিতাও করা হবে। থানা পুলিশ, ইমাম বেলাল হোসেন, মাওলানা আহমদ আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শত মানুষের উপস্থিতে বৃহস্পতিবার মৃতের জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।