২রা ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিয়েতে নগদ টাকাই সবার সুবিধা!
বার পঠিত

সমাজের কথা ডেস্ক : এক সময় গ্রাম বাংলায় বিয়েতে উপহার হিসেবে পিতলের কলস দেওয়ার প্রচলন ছিল। পিতল বা কাঁসার থালা, জগ, চামচ, পানের বাটা উপহার হিসেবে দেওয়া হতো। নব্বইয়ের দশকে চালু হয় কাচের বা সিরামিকের প্লেট—গ্লাস। সামর্থ্যবানরা সোনার চেইন, আংটিসহ নানা রকমের অলংকার, খাট—ফ্রিজ—টিভিসহ নানা আসবাবপত্র, এমনকি গাড়ি—বাড়িও উপহার দেন। কিন্তু অতীতের মতো এখনও প্রায় সব শ্রেণি—পেশার মানুষের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে নগদ টাকা দেওয়ার চল রয়ে গেছে। নগদ টাকার মতো প্রাইজবন্ড উপহার দেওয়ার চলও টিকে আছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এখন বরং বিয়েতে উপহার হিসেবে নগদ টাকা অথবা প্রাইজবন্ড দেওয়ার হার আগের চেয়ে বেড়ে গিয়ে থাকতে পারে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, কয়েক বছর আগেও অনেকে সোনার গহনা উপহার দিতে পারতেন। এখন একটা মোটামুটি মানের সোনার অলংকার কিনতে গেলে ৩০ হাজার টাকার বেশি লেগে যাবে। বিয়ের উপহার দিতে এত টাকা খরচ করার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। এছাড়া বাজেট অনুযায়ী মনমতো উপহার কিনতে গেলে সময় নষ্ট হয়, ভোগান্তিও হয়। এর চেয়ে নগদ টাকা দিয়ে দেওয়াটাই সুবিধাজনক ভাবছে মানুষজন।

অবশ্য ব্যাংক ও বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা সহকর্মী বা আত্মীয়—স্বজনের বিয়েতে উপহার হিসেবে প্রাইজবন্ড দেওয়ার প্রচলনটাও ধরে রেখেছেন। একাধিক ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, সহকর্মী বা স্বজনের বিয়েতে দাওয়াতে দলগতভাবে প্রাইজবন্ড বা নতুন টাকার বান্ডিল উপহার দেন তারা। একজন ব্যাংকের কর্মকর্তা আহমেদ বশির এ প্রসঙ্গে বলেন, কলিগ বা বন্ধুর বিয়েতে কী উপহার দেওয়া যায় এই চিন্তায় এখন সময় নষ্ট করতে চান না কেউ। উপহার বাছাই করার ঝামেলা ও কেনাকাটা করার ভোগান্তি এড়াতে অধিকাংশই নগদ টাকাকে এক নম্বরে রাখেন।

এদিকে যারা বিয়ে করেন, তাদের কাছেও প্রাইজবন্ড বা নগদ অর্থ বেশ সমাদৃত হচ্ছে উপহার হিসেবে। অন্যান্য উপহারের চেয়ে বরং বিয়ের খরচাপাতি মেটানোর জন্য নগদ টাকাই বেশি সুবিধাজনক। অনেক সময় কী উপহার নিতে চান এই প্রশ্নের জবাবে জিনিসপত্র নেওয়ার বদলে টাকার কথাই বলেন বর বা কনে।

বিয়ে মানেই খরচ আর খরচ। দিন দিন এই খরচের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অনেকের সামর্থ্য না থাকলেও সামাজিকতার খাতিরে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে হয়। খরচের ধকল সামলাতে কেউ কেউ ব্যাংক বা পরিচিতজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে উপহার হিসেবে পাওয়া নগদ টাকা কিছুটা হলেও বিয়ের খরচের কষ্ট লাঘব করে।

অনেকেই দাওয়াতের কার্ডে লিখে থাকেন— 'নো গিফট' বা 'উপহার কাম্য নয়'। এর অর্থও অনেক সময় হতে পারে—নগদ অর্থ নেওয়া যেতে পারে। নগদ অর্থ দেওয়াটাকেই বরং শোভনীয় মনে করেন অনেকে।

তবে উপহার হিসেবে সরাসরি ক্যাশ টাকা দিতে দ্বিধান্বিতও থাকেন কেউ কেউ। তাই চেক বা প্রাইজবন্ড দেওয়ার রেওয়াজ চালু হয়েছে। পুরস্কার বন্ড ও লটারি বন্ড নামে পরিচিত এই প্রাইজবন্ডে সুদের কোনও ব্যাপার নেই বলে একে কেউ কেউ সুদবিহীন বন্ডও বলে থাকেন। যেকোনও সময় এ প্রাইজবন্ড ভাঙিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া যায়। ভাঙানো ও কেনা দুটিই করা যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সব ক্যাশ অফিস, যেকোনও বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ডাকঘর থেকে। আর নিজের কাছে রেখে দিলে লটারিতে লাখ টাকা পুরস্কার জেতার সম্ভাবনাও থাকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
Fri Sat Sun Mon Tue Wed Thu
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram