নিজস্ব প্রতিবেদক : বিবর্তন যশোরের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন, নাটক ও আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার যশোর শিল্পকলা একাডেমিত মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত অধ্যাপক সুকুমার দাসের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন ও অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়েছে অধ্যাপক সুকুমার দাসের স্মরণে। অনুষ্ঠানে বিবর্তন যশোরের দু’টি নাটক মঞ্চস্থ হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
বিবর্তন যশোরের প্রথম নাটকটি ছিল রাধারমন ঘোষের রচনায় ‘চিচিংগে এন্ড কোং’। নাটকটি এমন: লেখাপড়া ভাল¬াগেনা তা-ধিন তা-ধিন ধিন,/ হৈ হুল্লোড় দুষ্টুমি আর খেলবো সারা দিন।/ বাবার ভয়ে যদিওনা বইটা নিয়ে বসি,/ পড়ালেখা শিকেয় তুলে দুষ্টুমির ছক কষি,/ বাবার চেষ্টা ব্যর্থ হল সব হল নস্যাৎ,/ মাস্টার পন্ডিত তান্ত্রিক মামা সবাই কুপোকাৎ।
চিচিংগে, বাতাসা, ঢেঁড়স, ফুলুরী- চার ভাই পড়াশুনা না করে সবসময় দুষ্টুমী আর খেলাধুলায় মশগুল থাকে। তাদের বাবা শতচেষ্টা করেও পড়াশুনায় মনোনিবেশ করাতে ব্যর্থ হয় বারংবার। চিচিংগে বাহিনী নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করে পড়ালেখা না করবার জন্য। ভাগ্নেদের মানুষ করার দায়িত্ব নেয় মামা, যদিও মামা নিজেও লেখাপড়ায় খুব একটা ভালো না। সেই মামাকেও নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে ভাগ্নেরা।
এমনকি পড়াশুনা না করবার জন্য বাবার মৃত্যু কামনা পর্যন্ত বসে ফুলুরী। এখানেই ঘটে পট পরিবর্তনের সূত্রপাত। না বুঝে বাবার মৃত্যু কামনাকারী ফুলুরীকে খুব বকাঝকার মাধ্যমে বাবার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ পায় এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মামার পরামর্শে বাবা আত্মহত্যার অভিনয় করে। তখন চিচিংগে বাহিনী কোনভাবেই বাবাকে বিষ খেতে দেবেনা বরং ঠিকমত লেখাপড়া করবে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
অপর নাটকটি সুকুমার রায়ের রচিত পাগলা দাশু।
দাশরথি বা দাশুকে সবাই পাগল বলে চেনে। মধ্যপাড়া বিদ্যালয়ে দাশুকে চেনেনা এরকম কেউ নেই। দাশু যে কখন কি করবে, কাকে বিপদে ফেলবে, তার জন্য অন্যকে কি ফল ভোগ করতে হবে তা নিয়ে সবাই ভয়ে ভয়ে থাকে। সবাই দাশুকে কোন কাজে রাখতে চায় না। কিন্তু সব কিছুতে ওর থাকা চাইই চাই। আর তাতেই যত বিপদ। কারণ দাশু থাকা মানেই উদ্ভট কিছু না কিছু ঘটবেই। বাংলা সাহিত্যে অমর সৃষ্টি সুকুমার রায়ের “পাগলা দাশু”। যুগ যুগ ধরে বাংলাভাষী মানুষদের শৈশব রাঙিয়ে রাখা এই গল্পগুলো থেকে আর ভাল কোন কিছু হতে পারে না শিশুদের নিয়ে নাটক নির্মাণের জন্য।
দাশুকে ঘিরে তার বন্ধুদের একের পর এক ঘটনা দেখা যায় নাটক “পাগলা দাশু” তে। আজকের ব্যস্ত ধুসর সময়ে আমাদের শিশুদের শৈশবও বিবর্ণ। নাটকে যেসব শিশুরা কাজ করছে তারা আনন্দ নিয়ে সময়টা উদ্যাপন করেছে।
চিচিংগে এন্ড কোং নাটকে অভিনয় করেছেন নিলাদ্রী বিশ্বাস, অর্পন সাহা, আরিয়ান মুগ্ধ, দেবজ্যোতি দে, প্রসূন বিশ্বাস, আদিত্য রায়, সৌরভ অধিকারী। পাগলা দাশু নাটকে অভিনয় করেছেন অদ্রি, মালিহা, সায়ন, প্রত্যূষ, বর্ণ, পৃথ্ব, ওয়াসি, কাব্য, স্বল্প, বর্ণ, স্বপ্নীল, মুগ্ধ, লিয়ানা, প্রত্যূষ, আফশিন, লিয়ানা, অদ্রি, মালিহা, কাব্য। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন অনিন্দ্য স্বপ্ন ও শ্রেয়সী দাস শ্রেয়া।