নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকায় ট্রাভেলস কমীর্ সোলায়মান হক হত্যা মামলায় আরাফাত ফারাজী আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। বিপিএল খেলায় খুলনা ও রংপুরের ম্যাচে বাজি ধরে হেরে টাকা না দেয়ায় গোলযোগে সোলায়মান ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। এ ঘটনার সাথে তারা ৮ জনসহ অপরিচিত আরও কয়েকজন ছিল বলে জানিয়েছেন আরাফাত।
রোববার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আসামি আরাফাত ফারাজী সদর উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের নিয়ামত ফারাজীর ছেলে। বর্তমানে তিনি শহরতলীর চাঁচড়া এলাকায় বসবাস করেন।
আদালতে স্বীকারোক্তি আরাফাত ফারজী জানিয়েছেন, গত ২৬ জানুয়ারি বিপিএল’এ খুলনা ও রংপুরের খেলা ছিল। এদিন বিকেলে তারা শহরের টিবি ক্লিনিক এলাকায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এসময় সোলাইমান রংপুরের পক্ষে এবং মেহেদী খুলনার পক্ষ নিয়ে ১ হাজার টাকা বাজি ধরে। খেলা শেষে রংপুর হেরে গেলে সোলাইমানের কাছে মেহেদী ও তার লোকজন বাজির এক হাজার টাকা দাবি করে।
সোলাইমান টাকা দিতে অস্বীকার করায় বাক—বিতন্ডার একপর্যায়ে মেহেদী ছুরিকাঘাতে জখম করে সোলাইমানে পক্ষের জসিমকে। এরমধ্যে সোলাইমানের লোকজন আরাফাতকে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে ফেলে। মেহেদী ও তার লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার যাওয়ার সময় ধাওয়া করে সোলাইমান ও তার লোকজন। এরমধ্যে মেহেদী ও তার লোকজন উল্টো ধাওয়া করে ছুরিকাঘাতে সোলাইমানকে জখম করে। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামিসহ ৮/১০ জন জড়িত বলে জানিয়েছে আরাফাত ফারাজী।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, সোলায়মান রেলরোডস্থ সোনালী ব্যাংক কপোর্রেট শাখার সামনে ফেডেক্স নামক একটি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের ম্যানেজার ছিলেন। গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে টিবি ক্লিনিক এলাকার পিযুষের চায়ের দোকানের চা পান করছিলেন। এ সময় একই এলাকার নজরুলের ছেলে জসিমকে ছুরিকাঘাত করে আরাফাত, মেহেদী ও জনি।
এসময় সোলায়মান প্রতিবাদ করলে তাকে ছুরি মারতে যায় আসামিরা। তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা পিছু ধাওয়া করে ষষ্ঠীতলাপাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে পেয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। সে সময় চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সোলায়মান মারা যান।
এ মামলায় আরাফাত ফারাজী পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল মালেক আদালতের আদেশে আত্মসমর্পণকারী আরাফাতকে একদিনের রিমান্ডে নেন। রিমান্ড শেষে রোববার আরাফাতকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ঘটনার সাথে জড়িত ও অপর জড়িতদের নামউল্লেখ করে আদালতে ওই জবানবন্দি দিয়েছেন।