২৭শে জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
টিকিটের অপেক্ষায় থাকা বিদেশগামী শ্রমিকদের বিমানবন্দরে অবস্থান
বিদেশগামীদের বিমানবন্দরে বসিয়ে দালালরা লাপাত্তা

সমাজের কথা ডেস্ক :  শাহিন রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়াগামী ৬ কর্মীকে গত চারদিন ধরে টিকিটের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন নানান কথা বলে টিকিট সংগ্রহের বিষয়টি এড়িয়ে যান। সবশেষ শুক্রবার (৩১ মে) সাতক্ষীরার ওই ছয় যুবককে বিমানবন্দরে আসতে বলেন। এজেন্সির কথা অনুযায়ী তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখানে যাওয়ার পর ওই এজেন্সির মালিককে ফোন দিলে টিকিট হবে আশ্বাস দেন।

এভাবে বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকার পর ওই এজেন্সির মালিককে দুপুর ১টার দিকে ফের ফোন দেন। তখন থেকে ওই এজেন্সি মালিকের ফোন নাম্বার বন্ধ পান তারা। তারপর থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই এজেন্সির মালিক ও দালাললের সঙ্গে যোগাযোগ করতেপারেনি ভুক্তভোগীরা। তাদের মতো মালয়েশিয়াগামী অনেক প্রবাসীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে। দালাল ও এজেন্সি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কর্মীদের বিমানবন্দরে আসতে বলে পালিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাতক্ষীরার মশিউর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের ২৭ তারিখ মালয়েশিয়া যাওয়ার টিকিট ছিল। কিন্তু ওইদিন পাঠাতে পারেনি। পরে ফের টিকিট দেওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের টিকিট দেয়নি। আমরা গতকাল রাত থেকে বিমানবন্দরে আছি। ঋণ করে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার পরে মালয়েশিয়া যেতে না পারলে, আমরা কীভাবে বাঁচবো। আমাদের টাকা নিয়ে দালালরা লাপাত্তা হয়েছে। আমাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক, নয়তো টিকিটের ব্যবস্থা করা হোক।
তাদের মতো হাজার হাজার বিদেশগামী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দালালদের খপ্পড়ে পড়ে অনিশ্চিত সময় কাটাচ্ছেন। তারা শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়া যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। শুক্রবার (২৭ মে) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিমানবন্দরে বিদেশগামী কর্মী ও স্বজনদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, গত ২১ মে পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৪ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেয়। ২১ মের পর আর অনুমোদন দেওয়ার কথা না থাকলেও বিএমইটির তথ্য বলছে, মন্ত্রণালয় আরও এক হাজার ১১২ জন কর্মীকে দেশটিতে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ৯৪৬ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে চার লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তথ্য বলছে, আজ বাংলাদেশ থেকে মাত্র এক হাজার ৫০০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন। অর্থাৎ অনুমোদনকৃত ৩১ হাজার ৭০১ জন কর্মীর যাত্রা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

কুয়ালালামপুরের দুটি আন্তর্জাতিক বিমান টার্মিনালের ফ্লোরে গতকাল পর্যন্ত ১৪টি দেশ থেকে আসা প্রায় ২০ হাজার কর্মী অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী বাংলাদেশের।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাতটি ফ্লাইট মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশের দুটি, ইউএস-বাংলার দুটি, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের একটি, এয়ার এশিয়ার একটি এবং বাতিক এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট মালয়েশিয়ায় যাবে।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধের সময় ঘনিয়ে আসায় বাড়তি দামে টিকিট বিক্রির অভিযোগ করেছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। বিমান বাংলাদেশের বিশেষ ফ্লাইটের টিকিটের দামও এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগপ্রক্রিয়ার দুর্নীতি নিয়ে গত ২৮ মার্চ মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেয় জাতিসংঘের চারজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ। তবে দুই দেশের সরকারই এই চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশি কর্মীদের জনপ্রতি সাড়ে চার থেকে ছয় হাজার ডলার পর্যন্ত নিয়োগ ফি দিতে হচ্ছে, যা ২০২১ সালে এই দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) খেলাপ। ওই এমওইউ অনুযায়ী, এই ফি হবে ৭২০ ডলার পর্যন্ত।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উভয় সরকারের কাছে এ বিষয়ে তদন্ত, অপরাধীদের বিচার এবং নৈতিক নিয়োগের নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। তবে ৬০ দিনের মধ্যে কোনো সরকার থেকে জবাব না আসায় এই চিঠি মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram