শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রিভারাইন বর্ডার গার্ডের (আরবিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সৈয়দ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, ৭৮ জনের মধ্যে ৪ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা বাংলাদেশি। তাদের বেশিরভাগের বাড়ি বরিশাল, নড়াইল ও খুলনা জেলায়। রোববার দুপুর ২টার দিকে কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদেরকে নিয়ে লোকালয় অভিমুখে রওনা দিয়েছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে তাদের কোস্টগার্ডের কাকা-দোবেকী ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মশিউর রহমান বলেন, তাকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে জানানো হয় উদ্ধার ৭৮ জন একপ্রকার কয়েক দিন না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে স্যালাইন, পানি ও খাবার প্রয়োজন। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় প্রশাসন, আরজিবি ও বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহযোগিতায় খাবার ও অন্যান্য পথ্য নিয়ে গতকাল সকালে তিনি মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পে পৌঁছান। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন, অধিকাংশই অসুস্থ। তবে তাদের ওপর কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কিনা সেটা এখনও জানা যায়নি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে নিয়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা রওনা দিয়েছেন। তারা এসব ব্যক্তিদের শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করবেন। পরবর্তীতে নাম-পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, সেই ৭৮ জনের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে ভবনে পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ রাত ১০টার দিকে তারা এখানে পৌঁছাতে পারেন। তাদেরকে কেন বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে, সেসব তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একাধিক নৌযানে সীমান্তবর্তী রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা ৭৮ জনকে বাংলাদেশের সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়ার জঙ্গলে ফেলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে অভিযোগ আনা হয়।