নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম—সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিএনপি—জামায়াত মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করছে।
ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি সবসময় খারাপ হয়। সিপাহী জনতার বিপ¬বের নামে কোন কর্মসূচি পালন করার সক্ষমতাও আজ তাদের নেই। তারা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এ কর্মসূচি প্রত্যহার করেছে। তার মানে এতদিন পরে তাদের বোধোদয় হয়েছে।
তারা তথাকথিত সিপাহী বিপ¬বের নামে খুনের রাজনীতি করেছে। সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস ও আগুন সন্ত্রাস, পুলিশ হত্যা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়তে পারেন : অগ্নিসন্ত্রাস রুখতে রাজপথে থাকতে হবে : নড়াইলে নাছিম
আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম আরও বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্রের, ভোট চুরির, ধ্বংসের, চাঁদাবাজির ও হত্যার রাজনীতি ও জামায়াতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ জেগে উঠেছে।
আমরা জানি যশোরের মানুষ সংগ্রামী মানুষ, লড়াকু মানুষ। মাত্র ১০ ঘণ্টার প্রস্তুতিতে হাজারও মানুষ সমবেত হয়েছে। এটা শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নয়।
তাই বিএনপি—জামায়াতকে বলে দিতে চাই, এ দেশে যারাই ধ্বংস ও নাশকতার রাজনীতি করবে তাদেরকে আমরা যে কোনো মূল্যে তাদের প্রতিহত করবো। এটাই চূড়ান্ত কথা।
দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করবে, দেশের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করবে তাদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী শক্তিকে আর কোনো রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আমাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সবাই সজাগ থাকবেন। বাংলাদেশের যে উন্নয়ন ধরা অব্যহত আছে সে ধারা বজায় রাখতে হবে। যাকেই নৌকা দেওয়া হবে তাকে বিজয়ী করার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল আলম মিলনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যায় সহযোগিতা করেছিল তারাই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জিয়া ও মুস্তাককে বাংলাদেশের ক্ষমতায় নিয়ে আসে।
একদিকে জিয়া সেনাবাহিনীর প্রধান ও অন্যদিকে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হয়ে ক্যান্টনমেন্ট বসে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা খরচ করে আলবদর—আল শামস, রাজাকারদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে। আর সে রাজনৈতিক দলের নাম রাখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
আর বিএনপি সৃষ্টির পর থেকে স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আজকে ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানের অজুহাত তুলে সেদিন সেনাবাহিনীর ভিতরে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা ছিলো তাদের হত্যা করে। বিএনপি আজকে যে দিবস পালন করত সে দিবস তারা পালন করতে ভয় পচ্ছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, তারেক জিয়া বিদেশে বসে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে আর পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সাথে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ১৯৭১ সালে যেমন পাকিস্তান টার্গেট করে হামলা করেছিলো।
তেমনি বিএনপিও ২৮ তারিখে পুলিশ ও হাসপাতালের উপর হামলা করেছে। বিএনপি জামায়াত অবরোধের নামে আগুন সন্ত্রাস করে। এরা পুলিশ হত্যা করে। সাংবাদিকদের মারপিট করে। এরা সন্ত্রাসীদের, জঙ্গীবাদের দল। এরা মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী দল। এ কারণে বিএনপির নেতাদের ঘর থেকে ধরে এনে পুলিশের নিকট ধরিয়ে দিতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, বিএনপি হত্যা ও কু'র রাজনীতির মাধ্যামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করেছিলো। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা তার বিপরীত রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে উন্নয়ন করছেন। যার উদাহরণ আপনারা আগামী ১৩ তারিখে খুলনার সমাবেশে মানুষের উপস্থিতির মাধ্যামে দেখতে পাবেন।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, এতো দিন আন্দোলন করছি আপনারা সাথে থাকেছেন। আন্দোলন সফল হয়েছে। গতকাল অবরোধ শেষে সন্ধ্যায় মনিহারের সামনে ও সার্কিট হাউজের উপরেও ককটেল মেরেছে সন্ত্রাসীরা।
আপনারা কি ললিপাপ চোষেন। এই ককটেল এবং আগুন সন্ত্রাসীদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেই জায়গায় তাদের সাইজ করতে হবে। এটা সবার মাথায় রাখতে হবে। যশোর হচ্ছে শান্তি আর স্বস্তির শহর। এ শান্তির যশোরকে অশান্ত করার চেষ্ঠা করছে।
সে কারণে আপনাদের বলবো, ১৩ নভেম্বর খুলনা বিভাগীয় জনসভায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন। আপনারা যশোর থেকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনসভাকে সফল করার মধ্য দিয়ে এই খুলনা বিভাগে আর কোন হরতাল অবরোধ করতে দেয়া হবে না।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, বিএনপি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলো ২৮ অক্টোবরের পর তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকবে কিন্তু এখন তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বিএনপি যদি সন্ত্রাস করে তাদেরকে তার সমচিত জবাব জনগণ দেবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিত কুমার নাথ, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সূর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোৎসস্না আরা মিলি, যুবলীগ নেতা আলমগীর কবির সুমন, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহামুদ বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবল শাহী।
উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু ,এসএম হুমায়ুন কবীর কবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী রায়হান, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাভোকেট গাজী আব্দুল কাদের, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমেদ কচি, শ্রম সম্পাদক কাজী আবদুস সবুর হেলাল, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়খ সম্পাদক হিসেবে সুখেন মজুমদার, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সেলিম রানা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পদাক ডা. এমএ বাশার, উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু, সদস্য মারুফ হোসেন খোকন, সামির ইসলাম পিয়াস,নাজমা খনম, প্রভাষক ফারুক হোসেন, আরশাদ পারভেজ, প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন, আনোয়ার হোসেন মোস্তাক, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, সহ—সভাপতি ফিরোজ খান, এহসানুল হক লিটু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলালীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু।