নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেছেন, আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করলে, যশোরের মাটিতে বিএনপিকে কঠোর হাতে দমন করা হবে। বিএনপি—জামায়াত যদি হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়, যশোরের ব্যবসায়ীরা ভয় পাবেন না। যশোরে দোকানপাট, ব্যাংক সবকিছুই খোলা থাকবে, যদি তাতে কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে জেলা আওয়ামী লীগ তাদের সে ক্ষতিপূরণ দেবে।
বিএনপি—জামায়াতের দেশবিরোধী অব্যাহত ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার ও পদযাত্রার নামে আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। সোমবার বিকালে চৌরাস্তা মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের এই শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বক্তা শাহীন চাকলাদার এমপি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে এতদিন কোনো আন্দোলন করেনি বিএনপি। হঠাৎ করে বিএনপি খালেদা জিয়াকে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আন্দোলন শুরু করেছে। এ থেকে বোঝা যায় দেশে জ্বালাও পোড়াও শুরু করবে বিএনপি। বিএনপি তো বোকার স্বর্গে বাস করে। রায় দিয়েছে আদালত, এখানে তো সরকারের কিছু করার নেই। তারপরও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে জেলখানার বদলে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বিএনপি যে মানুষকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো, আর শেখ হাসিনা তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
শাহীন চাকলাদার এমপি আরও বলেন, আপনারা বলছেন স্যাংশনের কথা, ভিসা নীতির কথা। আমাদের আমেরিকায় বাড়িও নেই, দুর্নীতির টাকায় ব্যবসাও নেই। তাই আমাদেরকে ভিসা নীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বরং এ ভিসা নীতিতে পড়েছে বিএনপি। কারণ ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তারা এর আওতায় পড়বে। কাজেই আপনারা আর জ্বালাও পোড়াওয়ের চিন্তা করবেন না।
শাহীন চাকলাদার বলেন, বিএনপি—জামায়াত ২১ বছর ক্ষমতায় ছিলো, তখন ৭মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পর্যন্ত কোথাও চালাতে দেয়নি। এমনকি বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিলো তাদের বিচার করা যাবে না বলে একটা অধ্যাদেশ জারি করেছিলো। এখন তারা আবারও ক্ষমতায় আসার জন্যে বিদেশিদের সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করে দিয়েছেন। কাজেই আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দেবে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ তার পক্ষে এক এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে নৌকাকে বিজয়ী করবে, ইনশাল¬াহ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েদের হাতে সময়মত বই দিতে পারেনি, কৃষকদের সার, বিদ্যুৎসহ কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছেন, সার দিয়েছেন, যার জায়গা ও ঘর নেই তাকে জায়গা ও ঘর দিয়েছেন, শেখ হাসিনা চিকিৎসার জন্যে কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করেছিলেন আর বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এসে দেশকে সামনের দিকে নিয়ে গেছে আর বিএনপির চিন্তা কী করে দেশকে ধ্বংস করা যায়। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম—সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন, যশোর—২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, সামিরুল ইসলাম পিয়াস ও আরশাদ পারভেজ, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান, ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ, জেলা কৃষক লীগের সহ—সভাপতি ইয়াকুব আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যুবলীগ নেতা হাজী আলমগীর কবির সুমন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মুন্সি মহিউদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল কবির বিপুল ফারাজী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষায়ক সম্পাদক ডাক্তার এম এ বাশার, সদস্য এহসানুর রহমান লিটু, মশিয়ার রহমান সাগর, মারুফ হোসেন খোকন, গোলাম মোস্তফা, সদর উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বিপুল, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বাবুল, সাধারণ সম্পাদক সরদার অলিয়ার রহমান, বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবিব, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম—সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, চাঁচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম রেজা, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির তুহিন, দেয়াড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, কচুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ধাবক প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু।
যশোর শহরের চৌরাস্তায় জেলা আওয়ামী লীগের এই সমাবেশে যশোরের আট উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। দুপুরের পর থেকেই উপজেলাগুলো থেকে বাসভর্তি করে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে যোগ দিতে শুরু করেন। এর পরপরই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। সমাবেশ শুরুর আগেই চৌরাস্তা থেকে লালদিঘিপাড় পর্যন্ত গোটা এলাকা নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। হাজার হাজার নেতাকর্মীর শ্লোগানে শ্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।