নিজস্ব প্রতিবেদক ও বাঘারপাড়া প্রতিনিধি : নতুন বাড়ির দোতলার কাজ শেষ হলেই বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সুদীপ্ত। নিজের পছন্দের মেয়ের কথাও জানিয়েছিলেন মা আর বোনকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।
দুর্ঘটনায় চিরবিদায় নিলেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দোগাছি গ্রামের কুমারেশ বিশ্বাসের ছেলে ও বাকড়ী বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী সুদীপ্ত বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার রাত ১ টার দিকে মরদেহ সুদীপ্তের বাড়ি পৌঁছায়। রাত গভীর হলেও জনপদ ছিল সজাগ। চারিদিকে ছিল কান্নার রোল।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে স্কুল শিক্ষক মা মিনতি ভৌমিক বারবার ছেলের কথা বলে বিলাপ করছেন আর মূর্ছা যাচ্ছেন। স্কুল শিক্ষক বাবা কুমারেশ বিশ্বাস ছেলের শোকে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। চেয়ারে বসে কি যেন ভাবছিলেন তিনি।
একমাত্র ছেলে অনন্তকালের যাত্রায় পাড়ি দিল বাস দুর্ঘটনায় রক্ত ঝরিয়ে। কি করে ভুলবে এমন দৃশ্য বাবা কুমারেশ বিশ্বাস। আর একমাত্র বোন তমা বিশ্বাস ভাইয়ের শবদেহ ধরে চিৎকার করে কাঁদছেন। মর্মান্তিক এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা কেউই।
স্বজনদের আহাজারিতে এগারোখান বাকড়ী এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সুদীপ্তের অকাল মৃত্যুতে শুধু স্বজনরাই নয়, কেঁদেছেন পাড়াপড়শি, সহকর্মী ও দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষেরাও। শেষবারের মতো দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমায় তার বাড়িতে।
প্রতিবেশি কলেজ শিক্ষক নিখিল কুমার আঢ্য বলেন, সুদীপ্ত ছিল সান্ত প্রকৃতির। কারো সাথে বিবাদে জড়াতে দেখিনি কখনো। সবাই তাকে ভালোবাসতো। শুক্রবার দুপুরে ঠাকুরদা ও ঠাকুমার সমাধির পাশে সমাহিত করা হয় সুদীপ্তের মরদেহ।
এদিকে একই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বিদ্যুৎ বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে দেখাগেছে সুনসান নিরবতা। কেউ কারো সাথে কথা বলছেন না। শুক্রবার সকালে সমাহিত করা হয় বিদ্যুতের মরদেহ। এরপর থেকে তারা নিস্তব্ধ হয়ে যায়।