ক্রীড়া ডেস্ক : নিজ জন্মশহরে সেঞ্চুরি করলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আর আইপিএল খেলার সুবাদে মাঠ নখদর্পণে রবীন্দ্র জাদেজার। চেন্নাইয়ের দুই খেলোয়াড় দারুণ একটা দিন কাটালেন। সকাল ও দুপুরের সেশনে ভারতের স্কোরবোর্ডে এসেছে সমান ৮৮ রান করে, উইকেটও পড়েছে তিনটি করে। কিন্তু শেষ সেশনে কোনও উইকেট না হারিয়ে এলো ১৬৩ রান! সপ্তম উইকেটের জুটিতে স্বাগতিকরা শুধু বিপদই কা্টিয়ে উঠলো না, নিয়েছে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও। ১০২ রানে অশ্বিন ও ৮৬ রানে জাদেজা অপরাজিত আছেন।
চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দিন ৮০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান করেছে ভারত।
হাসান মাহমুদের বোলিং তোপে ভারত ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। ঋষভ পান্ত ও যশস্বী জয়সওয়াল ওই ধাক্কা সামলে নেন ৬২ রানের জুটিতে। হাফ সেঞ্চুরি করা জয়সওয়াল পরে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়েন। দুই ব্যাটার ফিরে গেছেন পরপর দুই ওভারে। ১৪৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর অশ্বিন ও জাদেজা জুটি গড়েন। দিন শেষে ১৯৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি তাদের।
বাংলাদেশের পক্ষে হাসান চার উইকেট নেন। নাহিদ রানা ও মেহেদী হাসান মিরাজ পান একটি করে উইকেট। ৮ ওভার বোলিং করে সাকিবের ইকোনমি রেট সর্বোচ্চ ৬.২৫, ৫০ রান দেন তিনি।
অশ্বিনের সেঞ্চুরি, একই পথে জাদেজা
রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জুটি দুইশ ছোঁয়ার পথে। সপ্তম উইকেটে তারা বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছেন। ১০৮ বলে ১০ চার ও ২ ছয়ে ষষ্ঠ সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন অশ্বিন। জাদেজাও একই পথে হাঁটছেন। ৭৯ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৬ উইকেটে ৩৩৫ রান।
অশ্বিন-জাদেজার দেড়শ ছাড়ানো জুটিতে ভারতের লড়াই
৬ উইকেট তুলে নিয়ন্ত্রণ হাতে পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম উইকেটে অশ্বিন-জাদেজার জুটিতে সেই নিয়ন্ত্রণ বেশিক্ষণ নিজেদের কাছে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। তাদের শতরান ছাড়ানো জুটিতে স্কোর আড়াইশ ছাড়িয়েছে। অশ্বিন ১৫তম টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়েছেন। ২১তম ফিফটি তুলে নেন জাদেজাও।
অশ্বিন-জাদেজার জুটিতে দুইশ ছাড়ালো ভারত
৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর আক্রমণাত্মক জুটি গড়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দদ্র জাদেজা। দ্রুত গতিতে রান তুলে পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে এই জুটি। তাতে দলের স্কোরও ছাড়িয়েছে দুইশ। বেশি মেরে খেলছেন ঘরের ছেলে অশ্বিন। ৫০তম ওভারে অবশ্য রিভিউ নিয়ে রক্ষা পেয়েছেন জাদেজা। আম্পায়ার তাকে এলবিডাব্লিউ দিলে রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন তিনি।
দ্বিতীয় সেশনেই ভারতকে বিপদে ফেললো বাংলাদেশ
প্রথম সেশন সাম্যবস্থায় থাকলেও দ্বিতীয় সেশনটা নিজেদের করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। এই সেশনে ফিরেই পান্তকে ফিরিয়ে ৬২ রানের জুটি ভেঙে মূল প্রতিরোধটা ভেঙেছেন হাসান। তবে প্রান্ত আগলে হতাশ করছিলেন জয়সওয়াল। শেষ পর্যন্ত তাকেও ফেরানো গেছে। ততক্ষণে অবশ্য ফিফটি তুলে নেন তিনি। তাকে আউট করেন নাহিদ রানা। নাহিদের আঘাতের পর মিরাজের ঘূর্ণিতে ভারতের ষষ্ঠ উইকেট পড়লে পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বাংলাদেশের কাছে। ৩ বলে ২ উইকেট হারানো ভারত এখন ভীষণ বিপদে। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে তাদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭৬। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন (২১)। সঙ্গে রয়েছেন রবীচন্দ্র জাদেজা (৭)। এই সেশনে ২৫ ওভার খেলা হয়েছে। উইকেট পড়েছে ৩টি। যোগ হয়েছে ৮৮ রান।
জয়সওয়াল, রাহুলকে ফিরিয়ে নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ
এক দিকে প্রান্ত নড়বড়ে ছেড়েছিলেন পেসার হাসান মাহমুদ। অপরপ্রান্ত আগলে বাংলাদেশকে হতাশ করছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। অবশেষে দ্বিতীয় সেশনে তার প্রতিরোধ ভেঙেছেন পেসার নাহিদ রানা। তার দারুণ শর্ট অব লেন্থের গতিময় বলে এজ হয়ে ভারতীয় ওপেনার সাদমানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। ফেরার আগে ১১৮ বলে করেছেন ৫৬। পঞ্চম উইকেট হারানোর পরের ওভারে মিরাজের ঘূর্ণি কাজে এসেছে। তার বলে হালকা পুশ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন লোকেশ রাহুল। শর্ট লেগে ক্যাচআউট হয়েছেন ১৬ রানে। তাতে ৩ বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে গেছে স্বাগতিক দল।
হাসানের দাপুটে বোলিংয়ের মাঝেই জয়সওয়ালের ফিফটি
ভারতের একপ্রান্ত নড়বড়ে হয়ে পড়লেও আরেকপ্রান্ত আগলে শুরু থেকেই খেলছেন জসশ্বী জয়সওয়াল। তার প্রতিরোধে ভারত লড়াই করছে। তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পেতে খেলেছেন ৯৫ বল।
হাসানের জুটি ভাঙার পর ভারতের স্কোর একশ ছাড়ালো
সকালে হাসানের আঘাতে তিন উইকেট পড়ার পর চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েছিলেন জয়সওয়াল ও পান্ত। লাঞ্চ বিরতিতে থেকে ফিরেই ৬২ রানের এই জুটি ভেঙেছেন হাসান। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল অলস ভঙ্গিতে কাট করতে গিয়ে পান্ত গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। ৫২ বলে ৬ চারে ৩৯ রানে ফিরেছেন ভারতের উইকেটকিপার ব্যাটার। হাসানের এটি চতুর্থ শিকার।
হাসানের তিন উইকেট আর জয়সওয়াল-পান্তের প্রতিরোধে শেষ প্রথম সেশন
প্রথম টেস্টে টস জিতে বোলিং নেওয়ার কারণটা মাঠেই প্রমাণ করে দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। হাসান মাহমুদের পেস বোলিংয়ে প্রথম ঘণ্টাতে দারুণ সকালের ইঙ্গিত দিতে থাকে সফরকারীরা। তরুণ এই পেসার একে একে তুলে নেন রোহিত শর্মা, শুবমান গিল ও বিরাট কোহলির উইকেট। তাতে ভীষণ চাপে পড়ে স্বাগতিক দল। অবশ্য সেই চাপে পড়া মুহূর্ত থেকে আর সুবিদা আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাকি এক ঘণ্টা ওপেনার জসশ্বী জয়সওয়াল ও ঋষভ পান্ত মিলে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে প্রথম সেশনটা পুরোপুরি সফরকারীদের হতে দেয়নি। তাতে সাম্যবস্থায় থেকেই লাঞ্চ বিরতিতে গেছে দুই দল। অবশ্য বিরতির আগে পান্তকে ফেরানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন তাসকিন। এজ হয়ে স্লিপে ক্যাচ গেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সাদমান।
প্রথম সেশন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান। প্রায় ৪ এর কাছাকাছি রান রেটে রান তুলেছেন পান্ত-জয়সওয়াল। পান্ত ব্যাট করছেন ৩৩ রানে, জয়সওয়াল ৩৭ রানে। চতুর্থ উইকেটে এই পার্টনারশিপ যোগ করেছে ৫৪ রান।
প্রথম সেশনে আলো ছড়িয়েছেন শুধু হাসান। ৭ ওভারে দুই মেডেনে ১৪ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন। তাসকিন ৯ ওভার, নাহিদ রানা ৪ ওভার বল করলেও উইকেট পাননি। মিরাজও ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে উইকেটশূন্য থেকেছেন।