সমাজের কথা ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী বছর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক দেওয়া শুরু হবে; পুরস্কার হিসেবে থাকবে নগদ এক লাখ ডলার, ৫০ গ্রাম ওজনের একটি ১৮ ক্যারেট স্বর্ণপদক ও সনদ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তিপদক নীতিমালা-২০২৪ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র বা সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন ও এই ধরনের কাজের জন্য দেওয়া হবে এই শান্তিপদক।
“পুরস্কারের মধ্যে থাকবে ৫০ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেটের একটি স্বর্ণপদক এবং নগদ এক লাখ ডলার। একটি সনদপত্র দেওয়া হবে। প্রতি দুই বছরে একবার দেওয়া হবে। পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে প্রস্তাব করা যাবে।”
কারা নাম প্রস্তাব করবেন
সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান বা সেই দেশের সংসদ সদস্যরা, নোবেল পুরস্কার বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাসের প্রধান অথবা আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানরা, বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা, জাতিসংঘের কোনো সংস্থার প্রধানরা পুরস্কারের জন্য কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
পুরস্কারের জন্য সরকার একটি জুরি বোর্ড গঠন করবে। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
প্রতিবছর ১৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবসে বা জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এই পুরস্কার কার্যক্রমের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অর্থবিভাগ সেখানে সার্বিক সহযোগিতা করবে। জুরি বোর্ডের সদস্য হবেন খ্যাতিসম্পন্ন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, “আগামী বছর থেকে প্রতি দুই বছর পর পর এই পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রধানত একজনকে পুরস্কার দেওয়া হবে। কোনো বছর যদি একাধিক যোগ্য লোক পাওয়া যায়, বিবেচনা করা হবে। মন্ত্রিসভা এটা নিয়ে একটি আইন তৈরি করার কথা বলেছে। আমরা অচিরেই এই কাজ শুরু করব।
“আইনের মধ্যে একটি ফান্ড তৈরি করতে বলা হবে। সেই ফান্ডে সরকার বা বাইরের কোনো ব্যক্তি অনুদান দিতে পারবেন। সেই অনুদানের টাকা থেকে ব্যয় বহন করা হবে। এর আগ পর্যন্ত সরকার ব্যয়ভার বহন করবে।”
সচিব আরও বলেন, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ২৩ মে এই পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্ত উদযাপন করা হয়েছিল। সেদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শান্তিপদক প্রবর্তন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
“সেই প্রেক্ষিতে আমরা একটা নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। আজকে সেই নীতিমালা উপস্থাপন করেছি। মন্ত্রিসভা সেটি অনুমোদন করেছে।”