মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের মহেশপুরে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব। উপজেলার পৌর এলাকাসহ ১২টি ইউনিয়নে প্রতিদিন বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দিনে রাতে ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি ও বালি। ফসলি জমির পাশাপাশি সরকারি খাল—বিলও বাদ পড়ছে না মাটি খোরদের হাত থেকে। এ সব মাটি যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়। আর বালি যাচ্ছে মহেশপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার নির্মানাধিন বাড়ি ও রাস্তায়। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ভেকু জব্দ ও জরিমানা করা হয়েছে। এরপরেও থামছে না মাটি ও বালু উত্তোলন।
<<আরও পড়তে পারেন>> কপোতাক্ষ খননকৃত মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়
খেঁাজ নিয়ে জানাযায়, মহেশপুর উপজেলার এসবিকে, ফতেপুর, পন্তাপাড়া, স্বরুপপুর, শ্যামকুড়, নেপা, কাজীরবেড়, বাঁশবাড়িয়া, যাদবপুর, নাটিমা, মান্দারবাড়িয়া, আজমপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হারে চলছে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক জন কৃষক সাংবাদিকদের কাছে মাটি কাটার কারণে ফসলি জমির ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বিভিন্ন ফসলি জমি ২০ ফুট গর্ত করে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়,এতে পাশের ফসলি জমি গুলো ধসে পড়ছে। একাধিক চাষের জমির মাঝে জলাশয় তৈরি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুঃচিন্তার ছায়া। তাদের সেচের পানি চলে যাচ্ছে জলাশয়ে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এছাড়াও ভাটার ট্রাক ও হাইড্রলিক ট্রাক দিয়ে মাটি নেওয়ার সময় রাস্তার পাশে থাকা ফসল ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে। এতে রাস্তার পাশের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গছে রাস্তাও। এছাড়া প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকে।
গ্রামবাসীরা জানান, শুধু ফসলি জমি না নদীর পাড়ের মাটি, সরকারি খাস জমিসহ সরকারি বিলের মাটিও কেটে নিচ্ছে এ সকল সিন্ডিকেট।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)আসাদুজ্জামান জানান,মাটির উপরের স্তর বেশ উর্বর, যা এই সিন্ডিকেটের ফলে ফসলি জমি বেশ হুমকির মুখে পড়ছে। মাটি কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি প্রয়োজন অন্যথায় মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শরীফ শাওন জানান, আমি এ সকল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছি। এরপরেও প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। মাটি কাটা ও বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যহত থাকবে।