ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পুরাতন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ভৈরব নদের উপর নির্মিত বিকল্প কাঠের সেতুতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। নতুন করে নির্মাণের জন্যে এক বছর আগে মূল বেইলি ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায় বাধ্য হয়ে মানুষ বিকল্প এই সেতু ব্যবহার করছেন। এ অবস্থায় গাফেলতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্স পুরাতন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছোট বড় মোট ১০টি কংক্রিটের সেতু নির্মাণের কাজ পায়। এ বছর সেপ্টেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। এর আগে সওজ ২০২১ সালের শেষে দিকে বেইলি ব্রিজটিতে মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্রিজটি ভাঙ্গা শুরু করে।
মানুষ ও যানবাহনের চলাচলের জন্যে তারা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলার কাঁঠালতলায় বেইলি ব্রিজের পাশে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে। যেনতেনভাবে তৈরি করা কাঠের সেতুটি নির্মাণের ৫/৬ মাসের মধ্যেই নড়বড়ে হয়ে একপাশে হেলে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল পড়ুয়া শিশুসহ সাধারণ মানুষ যাতায়াত করছে। অপরদিকে দেড় বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও নতুন কংক্রিট সেতু নির্মাণ কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি শুধুমাত্র নদীর দু’পাশের রাস্তার প্রান্তে ভার্টিকাল ওয়ালের আংশিক কাজ করে রেখে দিয়েছে।
সেতুর পাশে বসবাসকারী স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে নদীর উপর বেইলি ব্রিজের বিকল্প হিসেবে ঠিকাদার বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করে। উপজেলা সদর ও পার্শ¦বর্তী দুই ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। নদীর দুই পাশে কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি স্কুল মাদ্রাসা রয়েছে।
প্রতিদিন ছোট বড় কয়েকশত শিক্ষার্থী এখান থেকে যাতায়াত করে। কিন্তু প্রায় ৫/৬ মাস ধরে সেতুটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেতুটির বেশ কয়েকটি অংশ ভেঙে গেছে। নদীর মাঝে সেতুর দুটি স্থানে দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে। সেতুর হেলে পড়া অংশ দিয়ে যাতায়াতের সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী বারবার বিকল্প সেতুটি মেরামতের দাবি জানালেও সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
মূলঘর ইউপি চেয়ারম্যান হিটলার গোলদার জানান, ভাঙা বিকল্প সেতুর জন্যে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিকল্প সেতু মেরামতের পাশাপাশি ওয়ার্ক অর্ডারে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে কংক্রিট সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করে জনগণের চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক মো. আশ্রাফ আলী বলেন, কোরবানীর ঈদের পরে গার্ডারের কাজ শুরু হবে। এর পর স্লাব ও রাস্তর কাজ করা হবে। বিকল্প সেতুটিও দ্রুত মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।
বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাগর সৈকত মন্ডল বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ১০টি সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্যে একাধিকবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তারা প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্যে কোনো আবেদন করেনি। তাই ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।