২৭শে জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তাপদাহে ‘প্রায় পানিশূন্য’ হাসপাতাল 
তাপদাহে ‘প্রায় পানিশূন্য’ হাসপাতাল : ১০টি টিউবওয়েলের ৮টি নষ্ট

এস হাসমী সাজু  :  যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ১০টি টিউবওয়েলের মধ্যে ৮টি নষ্ট। বাকি দুইটি টিউবওয়েলের পানিতে গন্ধ থাকায় রোগীরা পান করতে পারছে না। ফলে হাসপাতাল জুড়ে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

যশোর ২৫০শয্যা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন রোগে আক্রাšত্ম হয়ে হাসপাতালে প্রতিদিন ২শ থেকে ৩শতাধিক রোগী ভর্তি হন। এছাড়াও হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ রোগী ও হাজারের উপরে স্বজনরা অবস্থান করেন। এবাদেও প্রতিদিন হাসপাতালের বহিঃবিভাগ থেকে ১হাজার ৫শ থেকে ২হাজারের মত রোগী সেবা নিয়ে থাকে।

 

এ বিশাল সংখ্যক রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে হাসপাতালে বিভিন্ন সময় স্থাপন করা হয় ১০টি টিউবওয়েল। এর মধ্যে হাসপাতাল ঢুকতে প্রধান গেটের ডান পাশে ২টি ও বাম পাশে ১টি, হাসপাতালের জরম্নরি বিভাগের সামনে ২টি, পুরাতন ভবনের অপারেশন থিয়েটারের পশ্চিম পাশের ১টি, সংক্রামণ ওয়ার্ডের দড়্গণি পাশে ৩টি এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিস রম্নমের উত্তর পাশে ১টি টিউবওয়েল রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি টিউবওয়েল পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

 

বর্তমানে তত্ত্বাবধায়কের অফিস রম্নমের উত্তর পাশে টিউবওয়েল এবং পুরাতন ভবনের অপারেশন থিয়েটারের পশ্চিম পাশের টিউবওয়েল সচল রয়েছে। এ দুটির পানিতে দুর্গন্ধ থাকায় পান উপযোগী নেই।

এদিকে হাসপাতালে বড় ২টি গভীর পাম্প থাকলেও সেটির পানি ১৭টি ট্যাংকে জমা হয়। ট্যাংক পরিস্কার করা হয়না বলে সাধারণত এ পানি কেউ পান করে না। শুধুমাত্র টয়লেটের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ফলে হাসপাতালের বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে হাসপাতালের অপর একটি সূত্র জানিয়েছেন, ডাক্তার আবুল কালাম আজদ লিটু তত্ত্বাবধায়ক থাকাকালে রোটারি ক্লাবের অর্থে হাসপাতালের সিড়ির নিচে, দ্বিতীয়, তৃতীয় তলার করিডোরে, জরম্নরি বিভাগের সামনে আর্সেনিক মুক্ত খাবারের পানির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু রড়্গণাবেড়্গণের অভাবে আর্সেনিক মুক্ত খাবার পানির মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। জরম্নরি বিভাগ ও সিঁড়ির নিচের মেশিনের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।

২০২২ সালে করোনা কালে আšত্মর্জাতিক সংস্থা জাইকা হাসপাতালের সাইকেল স্ট্যান্ড ও টিকিট কাউন্টারের সামনে সাবমার্সেবলে স্থাপন করে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করেছিল। সেটি নষ্ট রয়েছে। ফলে বর্তমানে হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনে পৌরসভার সাবমার্সেবল পাম্পের উপর নির্ভর করছে রোগীর স্বজনরা। একটি সাবমার্সেবলে চাপ থাকায় থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন মিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, কেশবপুর উপজেলা থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন ৫ দিন আগে। প্রতিদিনই তিনি তার রোগীর জন্য ও আরো ২ স্বজনের জন্য হাসপাতালের গেটের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে খাবারের পানি সংগ্রহ করছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সময়ও নষ্ট হচ্ছে।

সদর উপজেলার বাহদুরপুর গ্রামের রেশমা পারভিন বলেন, ‘আমার ৬মাস বয়সী মেয়ে সাদিয়াকে নিয়ে গত বুধবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। হাসপাতালের বিশুদ্ধ পানির টিউবওয়েল নষ্ট থাকায় রাতে পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। ভোরে হাসপাতালের প্রধান গেটে গিয়ে এক বোতল পানি সংগ্রহ করতে হয়েছে। এভাবে সকল রোগীই পানি সংকটে রয়েছেন।’
রোগীর স্বজনরা আরও জানান, হাসপাতালের পাইপ লাইনে যে পানি আসছে, তাতে ময়লা ও পোকা থাকায় তা পানের অযোগ্য। এরপরেও ওই পানি দিয়ে থালাবাটি ধোয়ার কাজ করছেন তারা।

হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন, নষ্ট টিউবওয়েল ও সাবমার্সেবল মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রম্নত এ সমস্যার সমাধান হবে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারম্নণ অর রশিদ বলেন, পানি সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি এখন পর্যšত্ম কোনো অভিযোগ পাননি। তবে রোগীদের যাতে খাবার পানি পেতে কোনো কষ্ট না হয় এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মাস্টারদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram