ঝিকরগাছা পৌর ও পাইকগাছা প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন যশোরের ঝিকরগাছা ও খুলনার পাইকগাছার হাজারো উপকারভোগী। বুধবার ঝিকরগাছা ও পাইকগাছায় এই অনুষ্ঠান হয়।
যশোরের ঝিকরগাছায় সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে সুবিধা গ্রহণকারী নাগরিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ উপলক্ষে বুধবার বিকেলে ঝিকরগাছা বদরুদ্দীন মুসলিম (বি.এম) হাইস্কুল মাঠে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসন। জানা যায়, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, নারী ও শিশুদের উন্নয়ন এবং বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য সরকার কতৃক গৃহীত দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে নানাবিধ প্রকল্পের মাধ্যমে ঝিকরগাছা উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ প্রত্যক্ষ উপকারভোগী জনসাধারণ রয়েছে। তাদের পক্ষ হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, যশোর—২ (চৌগাছা—ঝিকরগাছা) আসনের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, স্বাধীন দেশ ও পতাকা দিয়েছিলেন। আর তারই কন্যা আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। আমরা অর্থনৈতিক জায়ান্টে পরিণত হতে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমরা পৃথিবীতে ৩৫তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে পরিগণিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেন। এজন্য মানুষকে বিভিন্ন ধরণের ভাতা প্রদান করছেন, ভূমি ও গৃহহীনদের তিনি জমি ও ঘর দিয়েছেন। শুধু ঝিকরগাছা উপজেলাতেই প্রায় দেড় লাখ সরকারি বিভিন্ন সুবিধাভোগী রয়েছে।’ এসময় তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, 'বিএনপির নেতৃত্ব দেয় খালেদা জিয়া যিনি এতিমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত। বিএনপির নেতৃত্ব দেয়া খুনি জিয়ার ছেলে তারেক জিয়াও পলাতক দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি। জেল খাটার ভয়ে সে দেশে আসেনা।
এদের সহযোগী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হলো চখা রাজাকারের ছেলে। সে বলেছিল পাকিস্তান এদেশের চেয়ে ভাল ছিল। আমি ফখরুল ইসলামকে বলে দিতে চাই পাকিস্তান যদি ভাল হয় তাহলে তুমি সেখানে চলে যাও, কেন বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে চাচ্ছো।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও সভাপতিত্ব করেন ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ যাতে সুখে শান্তিতে থাকতে পারে সেই খেয়াল রাখেন। এজন্য তাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম, ঝিকরগাছা পৌর মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল। সুবিধাভোগীদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন, নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষক উত্তম কুমার দাস, কৃষি উদ্যোক্তা মনজুর আলম ও নাসরিন সুলতানা, বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্ত নারী জহিরন বেগম, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাহ জামান দিবা, বিধবা ভাতাপ্রাপ্ত নাজমা বেগম, আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলপ্রাপ্ত মাজিদুল হক, ভিজিডি কার্ডধারী শাহজান আলী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা শাহিদা খাতুন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী রিজিয়া খাতুন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম মামুনুর রশীদ, শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের সিএ ইমদাদুল হক ইমদাদ। এসময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সকল ইউপি চেয়ারম্যানগণ, প্রায় ১০ হাজার উপকারভোগী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন পাইকগাছার হাজারো উপকারভোগী। বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান দুপুর দুইটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল হতে বিভিন্ন এলাকা থেকে উপকারভোগীরা অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করে। দুপুরের মধ্যেই কানায় কানায় ভরে যায় গোটা উপজেলা পরিষদ মাঠ ও আশপাশ এলাকা।
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতাধীন হাজার হাজার উপকারভোগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল—আমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আক্তারুজ্জামান বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস।
সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার সেবা সুশান্ত কুমার সরকার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ডি সার্কেল সাইফুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী, ওসি রফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আবুল কালাম আজাদ, কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, কওছার আলী জোয়ার্দার, কাজল কান্তি বিশ্বাস, জি এম আব্দুস ছালাম কেরু, শেখ জিয়াদুল ইসলাম জিয়া, প্যানেল মেয়র শেখ মাহবুবর রহমান রনজু। বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান আলী শেখ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার, সমাজসেবা অফিসার অনাথ কুমার বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আনিসুর রহমান মুক্ত, প্রাক্তন অধ্যক্ষ রমেন্দ্র নাথ সরকার, প্যানেল চেয়ারম্যান শংকর বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ সরকার, কাউন্সিলর আব্দুল গফফার মোড়ল, প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ , উপকারভোগী আব্দুস সাত্তার ও রুমি খাতুন।