খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরব হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। ৪ মেয়র প্রার্থীসহ ১৭৯ প্রার্থী প্রতীক পেয়েই নির্বাচনী প্রচারণা জোরে সোরে শুরু করেছেন। গণসংযোগ, পথসভাসহ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে উপস্থিত হচ্ছেন অনেকে। এলাকার উন্নয়নে ভোটারদের নানাভাবে দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। এদিকে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ঝুলতে শুরু করেছে প্রার্থীদের পোষ্টার। চায়ের দোকানগুলোতে নির্বাচনী আলোচনা আরো সরব হয়ে উঠেছে। তবে নির্বাচনী আচারণ বিধি কেউ যাতে অমান্য না করে তার জন্য মাঠে নেমেছে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
কেসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি রক্ষায় নিয়োজিত ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে নগরীর ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলতলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইউসুফ। ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দিঘলিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান। ৭, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে খুলনার সহকারী কমিশনার সৈয়দ রেফাঈ আবিদ। ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সহকারী কমিশনার অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী। ৯, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার এস এম শাহনেওয়াজ মেহেদী। ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভূপালী সরকার। ১৯, ২০ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে খুলনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম। ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে খুলনার সিনিয়র সহকারী কমিশনার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া। ২৪, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সহকারী কমিশনার রুপায়ন দেব এবং ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন রূপসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ হোসেন।
এদিকে খুলনা সিটির ৩১টি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি ওয়ার্ডের দুইজন কাউন্সিলর ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন, নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এসএম খুরশিদ আহম্মেদ টোনা এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেডএ মাহমুদ ডন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। এরা দু’জনই সদ্য সাবেক কাউন্সিলর।
বিভিন্নস্থানে গণসংযোগ ও পথসভায় আওয়ামী লীগ মনোনিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক
খুলনার উন্নয়ন ও নগরবাসীর নাগরিক সেবা দেয়ার লক্ষ্যে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি বলেন, ১২ জুন নির্বাচনে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে খুলনায় স্মার্ট স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা হবে। তিনি বলেন, বিএনপি খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে কিছুই দেয়নি। এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আওয়ামী লীগ যে প্রতিশ্রুতি দেয়, সেটা বাস্তবায়ন করে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেছেন। রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে সবকিছুর চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। আগামীতে খুলনাকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও দলীয় মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নগরীর ফুলবাড়ি গেট, দৌলতপুর বাজার, নতুন রাস্তা খালিশপুর, নিউমার্কেট, ডাকবাংলা, সোনাডাঙ্গা ও রূপসাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
জনসংযোগকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-কেসিসির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের প্রধান পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী পরিচালক আলহাজ মুফতি আমানুল্লাহ, সমন্বয়নকারী মুফতি ইমরান হুসাইন, নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, অর্থ সমন্বয়নকারী আবুু গালিব, সহ-সমন্বয়নকারী রবিউল ইসলাম তুষার, মিডিয়া সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রমূখ।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দলীয় মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে বৈকালীর মোড়, খালিশপুর, দৌলতপুর বাজার, রেলগেট, ফুলবাড়ী গেট, বয়রা বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন।
জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক অনুরুপ নির্বাচনী গণ সংযোগ করেন।
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ ও নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন। এবারের নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রে ভোট নেয়া হবে।