মনিরুজ্জামান মনির : গত রোববার বিকেলে ০১৬০২২৮২৪০৩ নম্বর থেকে ফোন পান কেসমত নোয়াপাড়া এলাকার তানিয়া খাতুন। ফোন কারী মির্জাপুর মহিলা কলেজ থেকে বলছি বলে জিজ্ঞাসা করে ‘আপনার বোন মিম মির্জাপুর মহিলা কলেজে পড়ে? হ্যাঁ বলতেই জানায় ‘মিমের নামে কলেজ থেকে ১১৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোড জটিলতার কারণে টাকা সেন্ড হচ্ছে না। আর এ কারণে আপনার বিকাশ নম্বরে ২৩৫০০ টাকা সেন্ড করেন।’ তানিয়া খাতুন তার ০১৮১১৯৪০২০৩ এ নম্বরে ২৩৫০০ টাকা সেন্ড করেন।
এ সময় তার মোবাইলে কোড নাম্বার সম্বলিত এসএমএস আসে। ফোনকারী কোডটি জানতে চায়। তাকে কোড বলার সাথে সাথে তানিয়ার বিকাশ একাউন্টের সব টাকা সেনড হয়ে যায়। এরপর ফোনকারীর নাম্বার বন্ধ হয়ে যায় তখন তিনি বুঝতে পারের প্রতারনার শিকার হয়েছেন। বিকাশ এজন্ট ২৩৫০০ টাকার জন্য তাকে বসিয়ে রাখে। রাত ১টার দিকে তার স্বামী গলার চেনের বিনিময়ে এজেন্টের দোকান থেকে বাড়িতে আনে।
ভুক্তভগী তানিয়ার স্বামী সোহেল জানান, আমি খুলনাতে ছিলাম। খবর পেয়ে আমি এসে সোনার চেনের বিনিময়ে স্ত্রীকে ছাড়িয়ে আনি। আমি খুবই গরিব মানুষ। গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাই। কেসমত নোয়াপাড়াতে ভাড়া বাসায় থাকি।’
একইভাবে প্রতারকের ফাঁদে পড়েছেন আলামিন হোসেন। তিনি জানান, গত শুক্রবার বিকেলে ০১৬০২২৮২৪০৩ ফোন দিয়ে আমাকে বলে আপনার মেয়ে শারমিনের কলেজ থেকে ১১ হাজার ৬’শ টাকা দেওয়া হয়েছে। এরিয়া কডের ঝামেলা হওয়ায় আপনাকে একটা কোড নম্বর পাঠানো হয়েছে। এই কোড নম্বর হচ্ছে ২৩৫০০। প্রতারক চক্রের সদস্য বলে ২৩৫০০ টাকা আপনার বিকাশ নম্বরে সেন্ড করেন। আর বলে আপনার বিকাশে একটি কোড যাবে সে কোডটি বলে আমাদের সাহায্য করেন। তাহলে আপনার মেয়ের কলেজের টাকা পেয়ে যাবেন। কোড দেওয়ার পরে আমার বিকাশের টাকা নেই। প্রতারকরা আমার সাথে যে কথা বলেছে সবই রেকর্ড আছে এবং থানায় জিডিও করেছি।
কেসমত নোয়াপাড়া মোড়ের বিকাশ এজেন্ট তহিদুল ইসলাম জানান, গত রোববার বিকালে তানিয়া নামের এক মহিলা আমার দোকানে এসে (০১৮১১৯৪০২০৩) ২৩৫০০ টাকা সেন্ড করতে বলে। আমি টাকা মেরে দিই। পরবর্তিতে মহিলা আমার টাকা না দিয়ে ফোনে কথা বলে। ১০-১৫ মিনিট পরে দেখি মহিলার চোখে পানি। আমি আমার টাকার কথা বললে কোন কথা বলে না। পরে আমার দোকানের সামনে লোক জড় হয়। মহিলা যে প্রতারোকের শিকার হয়েছে সেটা বুঝতে পারি। মহিলা টাকা দিতে না পারাই দোকানে বসিয়ে রাখা হয়। পরবর্তিতে আমার বাড়িতে নিয়ে যায়। এর পর তার স্বামী সাড়ে ১১ টার সময় স্বর্ণের চেনের বিনিময়ে তাকে নিয়ে যায়। আজকে আমার স¤পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেছে।
উপশহর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জানান, আমি এ বিষয়ে জানার পরে ঐ বাসায় যাই। অনেকে বলে বিকাশ প্রতারক ধরেছি। কিন্তু মহিলার নিকট হতে বিস্তারিত জানার পরে বুঝতে পারি এ মহিলা প্রতারকের শিকার হয়েছে। পরে আমি তহিদকে বলে আসি প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য। কোন সমস্যা হলে আমাকে বলতে। পরে শুনেছি মহিলার স্বামী টাকা পরিশোধ করে মহিলাকে নিয়ে গেছে। আমাদের সচেত হওয়া দরকার।