২০শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পেঁয়াজ কারসাজির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
164 বার পঠিত

ভারত সরকার কর্তৃক পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় রাতারাতি পেয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এটা অবিশ্বাস্য, অগ্রহযোগ্য। ভারতীয় পেঁয়াজ আসবে না খবরেই রাতারাতি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়ারা দেশপ্রেমিক না। তারা আত্মপুজারি। এদের মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামীতে আরও অস্থিতিশীল অবস্থা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশি¬ষ্ট মহল। একেই বুঝি বলে ব্যবসায়ী অসাধুতা ও অসততা, যাকে আমরা প্রায়ই সিন্ডিকেট বলে অভিহিত করে থাকি।

প্রশ্ন হলো, প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে আরোপ করেছে নিষেধাজ্ঞাÑ এই পর্যন্ত ঠিক আছে। তাই বলে দেশে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ মজুত ফুরিয়ে গেছে রাতারাতি? ইতোমধ্যে দেশীয় আড়ত ও বাজারে যে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আছে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য, তা কি বিক্রি হয়ে গেছে এর মধ্যে? অথবা, ভারত ও অন্য দেশ থেকে যে সব আমদানির পেঁয়াজ পাইপ লাইনে রয়েছে, সেসব তো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে না।

তাহলে অযথা ও অযৌক্তিকভাবে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের দামে উল¬ম্ফন ঘটবে কেন? এসব অসাধু ব্যবসায়ীকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে যথাযথ জরিমানা ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে। টিসিবির মাধ্যমে আপাতত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না। এরও সুযোগ নিচ্ছেন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। তবে আশার কথা হচ্ছে, দেশীয় নতুন পেঁয়াজ ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। আমদানি বেশি হলে দেশী পেঁয়াজের দামও কমে আসবে অচিরেই। বাজারে অন্যান্য দেশের পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা এবারে খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন বলে মনে হয় না।

কিছুদিন আগে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম সামলাতে। সেই খবরে সেদিনই চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার শ্যামবাজার—কাওরান বাজারে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। ভারতের আরোপিত নতুন শুল্কের পেঁয়াজ কখনো দেশে আসেনি। তবু বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সে অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে মিয়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করতে হবে সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। তা না হলে অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি সামাল দেওয়া দুঃসাধ্য হতে পারে। অন্যান্য দেশ থেকেও সরকার টু সরকার পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আমদানি করা যেতে পারে।

দেশে বছরে পেঁয়াজের গড় চাহিদা ২৬—২৮ লাখ টন। দুই ঈদ ও শীত মৌসুমে চাহিদা কিছু বেশি থাকে। রমজান ও কোরবানিতে পেঁয়াজের চাহিদা সর্বোচ্চ বেড়ে দাঁড়ায় আরও দেড়—দুই লাখ টন। এর ৬০ শতাংশ মেটানো যায় স্থানীয় উৎপাদন থেকে। বাকি ৪০ শতাংশ পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো হয় প্রধানত ভারত থেকে আমদানি করে। বাস্তবতা হলো, ব্যবসায়ী মহল যদি আন্তরিক হন এবং সদিচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে আপাতত অভ্যন্তরীণ মজুত ছেড়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। কেননা, বিপুল পেঁয়াজের মজুত রয়েছে দেশেই। ব্যবসা—বাণিজ্যে লাভ—ক্ষতি—মুনাফা ইত্যাদি থাকবেই। তবে এসব হতে হবে নীতি—নৈতিকতা, সততা ও নিয়মকানুনের ভিত্তিতে; যে ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি রয়েছে বহুলাংশে। সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কঠোর মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে হবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram