আতাউর রহমান, বেনাপোল: হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে ভ্রমণে পাসপোর্টধারীদের ঢল নেমেছে। শনি থেকে মঙ্গলবার টানা ৫ দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে অনেকে পূজা উপভোগের পাশাপাশি দর্শনীয় স্থান দেখতে যাচ্ছেন। তবে কেউ কেউ যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা নিতে। আবার অনেকে ভারত থেকে বাংলাদেশেও আসছেন ।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ভ্রমণ কর ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ বাড়লেও বন্দরে সেবার মান বাড়েনি। সেখানে রয়েছে দালালের হয়রানি ও প্রতারণা। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ৩দিনে ১৯ হাজার ৬২৭ জন পাসপোর্টযাত্রী ভারত—বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন। এদের মধ্যে গত বুধবার ৫ হাজার ৬৪৮ জন, বৃহস্পতিবার ৬ হাজার ৫৮৯ জন এবং শুক্রবার ৭ হাজার ৩৯০ জন যাতায়াত করেছেন। শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছেন। দিনের অবশিষ্ট সময়ে যাতায়াতের জন্যে তখনো অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।
কয়েকজন পাসপোর্টধারী জানান, কয়েক বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকায় পাসপোর্টধারীরা ইচ্ছেমতো ভারত—বাংলাদেশে যাতায়াত করতে পারেননি। তবে এখন এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ভারত ভ্রমণে আর কোনো বাঁধা নেই। লম্বা ছুটি পেয়ে পরিবার নিয়ে পূজা উপভোগ করতে, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ, চিকিৎসা ও ব্যবসায়িক কাজে ছুটছেন ভারতে তারা। কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা ছুটিতে বাংলাদেশের পূজা দেখা ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করতেই এসেছেন।
জানা গেছে, বর্তমানে ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারকে প্রত্যেক শিশুর জন্যে ৫৫৫ টাকা ও বড়দের ১হাজার৫৫ টাকা ভ্রমণ কর ও টার্মিনাল চার্জ এবং ভারত সরকারকে ভিসা ফি বাবদ ৮৪০ টাকা দিতে হচ্ছে। তবে এ নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ এতগুলি টাকা দিলেও সুবিধা বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় গভীর রাত থেকে ঠান্ডা, রোদ—বৃষ্টি মধ্যে সড়কের ওপর দীর্ঘলাইন ধরে দাঁড়াতে হয় যাত্রীদের। এছাড়া রয়েছে দালাল চক্রের হয়রানি। দ্রুত কাজ করে দেয়ার কথা বলে দালালরা টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে।
<< আরও পড়তে পারেন >> পানির বোতল দিয়ে মণ্ডপ সজ্জা, নজর কাড়ছে যশোরবাসীর
ভারতগামী যাত্রী অমল কান্তি বলেন, পূজায় ভারতে যাচ্ছি। তবে বেনাপোল বন্দরে ভোগান্তির শেষ নেই। শনিবার ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারিনি। এ ছাড়া দালালদের দৌরাত্ম এখানে খুব বেশি। সেবা বাড়ানো দরকার বলে মনে করি।
ভারত থেকে আসা যাত্রী প্রিয়া সুখদেব বলেন, বাংলাদেশে এসেছি স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। একসঙ্গে পূজার আনন্দ করতে। সময় পেলে দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরবো।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আর্মড ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক সঞ্জিব কুমার বড়ই বলেন, যাত্রীর চাপ বাড়ায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তবে সব ধরনের হয়রানি ছাড়া পারাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
<< আরও পড়তে পারেন >> আজ মহা অষ্টমী, অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, স্বাভাবিক সময়ে এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার হলেও বর্তমানে পূজার কারণে দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। তিনি আরও বলেন, সামনে এমন সময় আসছে, যখন কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না।