নিজস্ব প্রতিবেদক : পানির বোতল দিয়ে সাজানো হয়েছে একটি পুজা মণ্ডপ। প্রধান ফটকসহ ভিতরেও রয়েছে অভিনব এ বোতলের সাজ। এই সাজে ব্যবহার করা হয়েছে হরেক রং এর ৭ হাজারের বেশি পানির খালি বোতল।
এমন ব্যতিক্রম, অভিনব সাজ সজ্জা দেখা গেছে যশোর শহরের বিমানবন্দর সড়কের আরবপুরের গোরাপাড়ায়। নিজস্ব চিন্তা, চেতনায় রাস্তার গা ঘেঁষে দুর্গাপূজার এমন একটি গেট নির্মাণ করেছে স্থানীয় গোরাপাড়াবাসিরা। যেখানে রয়েছে চলতে পথে চোখ আটকে যাওয়ার মতো নান্দনিক এক সাজ। এমন অভিনব গেট রীতিমতো যশোর শহরে সাড়া ফেলে দিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
যশোর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোরাপাড়ায় তৈরি করা হয়েছে এটি। গেটের প্রায় ৫০ গজ দূরে গোরাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দির। রাস্তার দুই পাশজুড়ে ও ওপরে লাগানো হয়েছে মরিচবাতি। গলিপথসহ, বাড়ির সামনে যতটুকু জায়গা, রাতের বেলা তা সবই লাল, নীল আলোতে আলোকিত। দিনের বেলা পরিস্কার ঝকঝকে, তকতকে।
এই গোরাপাড়ায় বসবাস করে ১২০ টি দলিত শ্রেণির পরিবার। তারা প্রতিবছর দুর্গাপূজায় ব্যতিক্রম আয়োজন, সাজ সজ্জা করে আসছেন। তার ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারের দুর্গাপূজাতেও। মন্দিরে দুর্গা, অসুর, গণেশসহ সব প্রতিমার গায়ের রঙে আনা হয়েছে ভিন্নতা। এবার সবুজের আধিক্য বেশি। প্রতিবার পুজোয় যেমন গেট করা হয় নান্দনিকভাবে, তেমনি প্রতিমাগুলোতেও আনা হয় ভিন্নতা।
<< আরও পড়তে পারেন >> আজ মহা অষ্টমী, অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা
পানির খালি বোতল দিয়ে গেট তৈরির কারণ জানতে চাইলে মন্দির কমিটির সভাপতি ভরত দাস বলেন,‘আমরা গোরাপাড়াবাসি প্রতিবারই দর্শনার্থীদের নিত্য নতুন কিছু উপহার দিই। এবছর পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প¬াস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে গেট তৈরি করেছি। পুজাশেষে এই বোতল গুলো পুড়িয়ে ফেলা হবে। এর মাধ্যমে আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।'
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপংকর দাস বলেন, 'সারাদেশের মানুষের জন্য আমাদের এলাকার মানুষের পক্ষে একটাই বার্তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প¬াস্টিক বর্জন করুন। যত সুন্দরই দেখতে হোক না কেন প¬াস্টিক পরিবেশ বান্ধব না।'
এখানে ব্যবহার করা পানির সাদা বোতল, সবুজ ও খয়েরি বোতল প্রায় ৬ মাস ধরে সংগ্রহ করা হয়েছে। এলাকার ছেলেরাই করেছেন বোতল সংগ্রহের কাজ। কিছু বোতল কেনা হয়েছে। গেটটি নির্মাণে খরচ পড়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। ব্যতিক্রম ও নান্দনিক এই গেট তৈরিতে প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করেছেন সজিব দাস, সাজু দাস, শিপলু দাসসহ গোরাপাড়াবাসি।
প¬াস্টিকের বোতল দিয়ে নান্দনিক গেট তৈরির প্রধান কারিগর সজিব দাস বলেন, 'এই গেটে সাত হাজার ২০১ টি খালি বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। যার বেশিরভাগই সাদা বোতল। এ ছাড়া প্রায় ১৫ কেজি পেরেক, ১০ কেজি তার এবং প্রায় ৩০ সিএফটি কাঠের বাটাম ব্যবহার করা হয়েছে।