নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশে একশ্রেণির অপশক্তি পাঠ্যবইয়ে যে তথ্য নেই, সেই তথ্য আছে বলে বিভ্রাšিত্ম ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আমাদের যদি ভুল থাকে, ভুল স্বীকার করে সংশোধন করবো। ইতোমধ্যে যেখানে ভুল দেখা গেছে, তখনই দায়িত্বশীলদের দিয়ে সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে।
নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবইয়ে কোথাও কোথাও ভুল থাকতে পারে, এগুলো সংশোধনের জন্য দুটি কমিটি করে দিয়েছি। ভুলগুলো চিহ্নিত হলে সাথে সাথে সংশোধন করা হবে। তবে যেখানে ভুল নেই; সেখানেও ভুল নিয়ে মিথ্যাচার করছে একটি অপশক্তি। তারা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
যারা মিথ্যাচার করছে সেই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থেকেই প্রতিহত করবো। এসময় মন্ত্রী মিথ্যা অপপ্রচারে কান না দেয়ার আহ্বান জানান।
যশোরে ৫১তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়াšত্ম পর্বের উদ্বোধনী প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় যশোর শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামে বেলুন উড়িয়ে ৬ দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বা¯ত্মবায়নে তারই কন্যা শেখ হাসিনা দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছেন। আমাদের অনেক লক্ষ রয়েছে।
আমাদের লড়্গ্য উন্নত সমৃদ্ধ টেকসই বাংলাদেশ গড়ার। দেশ গড়বার জন্য যেমন সম্ভাবনা রয়েছে; তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সম্ভাবনাকে সম্ভব করতে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের তৈরি করতে হবে।
সেই তৈরি হওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তাদেরকে সুস্থ ধারায় সুন্দর মন নিয়ে কর্মের লক্ষে এগিয়ে যেতে পারে।
তারই অংশ হিসাবে বিগত শিক্ষাব্যবস্থাকে রূপাšত্মর করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের দক্ষতা বৃদ্ধি ও চিšত্মা করবার দক্ষতা অর্জিত হবে। তারা সমসাময়িক বিষয়ে সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা
বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. ওমর ফারম্নক, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান প্রফেসর
তপন কুমার সরকার, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.আহসান হাবিব।
বক্তব্য শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অলিম্পিক মশাল প্রজ্বালন, সুশৃঙ্খল প্যারেড, স্কুল শাখার ছাত্রীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ ডিসপেস্ন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চমৎকার ক্রীড়া নৈপূণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে সকলকে মুগ্ধ করে তোলে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব জানান, পদ্ম, গোলাপ, বকুল ও চাঁপা এই চারটি অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত পদ্ম।
রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত চাঁপা। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিলস্না এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে বকুল। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের নিয়ে গঠিত গোলাপ। শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকস্’র পাশাপাশি হকি ও সাইক্লিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
নাদিরা ইসলাম স্মৃতি ইনডোর ভলিবল গ্রাউন্ডে ভলিবল, বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে বাস্কেটবল, জিমনেসিয়ামে ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিস অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রী ক্রিকেট শামস্-উল হুদা ফুটবল একাডেমি মাঠে ও ছাত্র ক্রিকেট প্রতিযোগিতা উপশহর কেন্দ্রীয় ক্রীড়া উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রতিযোগিতার ৫১তম আসর চলবে মঙ্গলবার পর্যšত্ম। ৬দিন ব্যাপী শুরম্ন হওয়া ৮টি ইভেন্টে ৮২৪ জন ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করবে।
এর মধ্যে ছাত্র ৪৪০জন ও ছাত্রী ৩৮৪ জন। অ্যাথলেটিক্স, ছাত্র ও ছাত্রীদের ভলিবল, বাস্কেটবল, হকি, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও সাইক্লিং ইভেন্ট রয়েছে। অ্যাথলেটিক্সে সবচেয়ে বেশি ৩৪৪ জন অংশ গ্রহণ করবে।
এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় চারদিন মাঠের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে যশোরের ৬টি মাঠ।
জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ, দ্বিতীয় হওয়া প্রতিষ্ঠানকে ৭০ হাজার ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে। এছাড়া বিজয়ী প্রতিযোগীদের ট্রফি, মেডেল, প্রাইজবন্ড ও সনদপত্র প্রদান করা হবে।