সমাজের কথা ডেস্ক : পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে অচলাবস্থা শিগগিরই কাটছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ সম্ভাব্য জোট সরকারের প্রধান দুই শরিক পাকিস্তান মুসলিম লীগ—নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এখনো সরকার গঠন সংক্রান্ত সব ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি সেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তারপর পেরিয়ে গেছে ৯ দিন; কিন্তু কবে সরকার গঠন হবে— তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো।
নির্বাচনের ফলাফল নিজেই অবশ্য তার একটি বড় কারণ। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি, তার মধ্যে নির্বাচন হয়েছে ২৬৫টি আসনে। কোনো দল যদি সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অন্তত ১৩৩টি আসনে সেই দল বা জোটকে জয়ী হতে হবে।
<<আরও পড়তে পারেন>> পাকিস্তানে সরকার গঠনের সমীকরণ জটিলতর হচ্ছে
কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে কারাবন্দি নেতা ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক—ই ইনসাফ (পিটিআই)— ৯২টি আসন। পিটিআইয়ের পর এই তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ—নওয়াজ (পিএমএলএন)— ৭৫টি আসন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)— ৫৪টি আসন, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম)— ১৭টি আসন, জামায়াতে উলামায়ে ইসলাম—ফজলুর (জেইউআইএফ)—৪টি আসন এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা পেয়েছেন ৯টি আসন।
অর্থাৎ কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম আসন পায়নি। এই পরিস্থিতিতে জোট সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয় পিএমএলএন এবং পিপিপির মধ্যে। গত ৯ দিনে মোট ৫ বার বৈঠক হয়েছে এই দুই দলের মধ্যে, তবে সেই বৈঠক থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
সর্বশেষ বৈঠকটি হয়েছে সোমবার। পিএমএলএনের জ্যেষ্ঠ নেতা ইসাক দারের ইসলামাবাদের বাসভবনে হওয়া সেই বৈঠকও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে মঙ্গলবারের বৈঠকে তৃতীয় দল হিসেবে যোগ দিয়েছিল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পার্টি (এমকিউএমপি)। দলটির কেন্দ্রীয় নেতা কামরান তেসোরি জানিয়েছেন, এমকিউএমপি পিএমএলএনকে সমর্থন করে এবং জোট সরকারের শরিক হতে আগ্রহী।
তিনি আরো জানান, পিএমএলএন এবং পিপিপির মধ্যে দ্বন্দ্ব মূলত সরকারি মন্ত্রণালয় ভাগাভাগি নিয়ে।
কামরান তেসোরি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আসিফ আলি জারদারিকে (পিপিপির কো চেয়ারম্যান এবং দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির বাবা) পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিতে কারোর আপত্তি নেই, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের বণ্টন নিয়ে এখনো কোনো সুরাহায় পৌঁছানো যায়নি।’