পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ফকির আলমশাহ পুকুর ও ঈদগাহ সংরক্ষণে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম আব্দুস সালাম কেরু। নির্মাণ কাজে আর্থিক বরাদ্দ দিয়ে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আক্তারুজ্জামান বাবু। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ হলে গবাদি পশু ও বন্য প্রাণীসহ হাঁস মুরগি সহজে আর পুকুর এলাকার মধ্যে ঢুকতে পারবে না। এর ফলে পুকুরের পানির গুণগত মান বজায় থাকাসহ ঐতিহ্যবাহী পুকুর ও ঈদগাহের পবিত্রতা সংরক্ষণ হবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উলে¬খ্য এই উপজেলার ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার মধ্যে গড়ইখালীর ফকির আলমশাহ পুকুর অন্যতম। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, আলমশাহ ফকির একজন বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। শত শত বছর আগে গড়ইখালী ইউনিয়নের ফকিরাবাদ গ্রামে বাস করতেন আলমশাহ ফকির ও তার বংশধররা। প্রচলিত আছে, তৎকালীন সময়ে আলমশাহ ফকির খড়ম পায়ে দিয়ে খরস্রোতা শিবসা নদী হেঁটে পার হতেন। তার নামেই
ইউনিয়নের সদর গ্রামের নামকরণ করা হয় ফকিরাবাদ। এ গ্রামেই তাদের ১৬ বিঘা সম্পত্তির উপর গড়ে উঠেছে ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ গড়ইখালী আলমশাহী ইনস্টিটিউট, বিশাল মাঠ, মাঠের দক্ষিণ পাশে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর দক্ষিণ পাশে ৫ বিঘার জমির উপর রয়েছে ঐতিহ্যবাহী আলমশাহ পুকুর ও ঈদগাহ। এদিকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় পুকুর এবং ঈদগাহ দীর্ঘদিন অরক্ষিত রয়েছে।
ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আছাদুজ্জামান জানান, পুকুরের পাড়েই রয়েছে আলমশাহ ঈদগাহ। এটিই ইউনিয়নের একমাত্র এবং কেন্দ্রীয় ঈদগাহ। ইউনিয়নের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সবাই এখানেই পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করে থাকেন। এর পবিত্রতা বজায় রাখা জরুরি বলে জানান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার।
ইউপি চেয়ারম্যান জি এম আব্দুস সালাম কেরু জানান, ফকির আলমশাহ পুকুর শুধু ইউনিয়নের ঐতিহ্য না। এই পুকুরের পানি পান করে জীবন ধারণ করে পাইকগাছা, কয়রা ও দাকোপসহ ৩ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। পুরো ঈদগাহ ও পুকুর জুড়ে সীমানা প্রাচীর না থাকায় অবাধে পশুপাখিসহ অন্যান্য প্রাণী ঢুকে পড়ে। এতে পুকুরের পানির গুণগত মান নষ্ট হয়।
বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আক্তারুজ্জামান বাবুকে অবহিত করলে তিনি পুকুরটি সংরক্ষণে আর্থিক বরাদ্দ দিয়েছেন যে বরাদ্দের টাকা দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে চারিদিকের প্রাচীর সম্পন্ন করতে আরো বরাদ্দের প্রয়োজন। চারিপাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঈদগাহের পবিত্রতা বজায় থাকার পাশাপাশি পুরো পুকুর এলাকা সংরক্ষণের আওতায় আসবে বলে স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি জানান।