১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ ভেড়ামারা থেকেও দৃশ্যমান

ভেড়ামারা প্রতিনিধি: পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ পদ্মার পশ্চিমতীর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকেও দৃশ্যমান। একই সাথে বিশ্বের কাছে দৃশ্যমান হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নতি। আকাশে উঁকি দেওয়া কুলিং টাওয়ারগুলো কয়েক কিলোমিটার দূরে থেকেও স্পষ্ট দেখা যায়। বাংলাদেশের জন্যে এটি ছিল এক সময়ে কল্পকাহিনী, এখন বাস্তবে তাই সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকটি টাওয়ারের উচ্চতা হবে ১৭৫ মিটার। পুরো এলাকাজুড়ে চলছে রাজ্যের ব্যস্ততা, কারো যেনো দম ফেলাবার ফুসরত নেই। রাতদিন বিরামহীনভাবে চলছে ভিশনারি প্রকল্পটির নির্মাণ যজ্ঞ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। দলটি ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্যে রাশিয়া থেকে এসেছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নতুন ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ ।

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের সাজে রূপপুর এলাকা। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিভিন্ন রঙের পতাকা শোভা পায়। গ্রিনসিটি আবাসিকের সামনের প্রাচীরে রঙিন চিত্রকর্ম নজর কাড়ছে সবার। একদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অন্যদিকে সাজসাজ রব। সব মিলিয়ে রূপপুর যেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ভিন্ন এক জায়গা। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৩তম পারমাণবিক দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

এর আগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে এসে পেঁৗছায়। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে সড়কপথে ঢাকা থেকে রূপপুরে আনা হয় চালানটি। ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। শুক্রবার ৬ অক্টোবর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান রাজধানী ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পেঁৗছেছে।

তথ্যমতে, ১৯৬১ সালে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হলেও গতি পায় ২০০৮ সালের পরে। তখন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে আওয়ামী লীগ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে। ২০০৯ সালে দলটি ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ১ হাজার ৬২ একর জমির ওপর প্রকল্পের পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু হয়। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, নির্ধারিত সময়ে চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

২০২৪ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটির উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে উল্লেখযোগ্য রাখবে বলে আশা করছেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram