১৫ই জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পরকীয়া প্রেমের বলি ছয় মাসের শিশু
পরকীয়া প্রেমের বলি ছয় মাসের শিশু

সমাজের কথা ডেস্ক : রাজধানীর পল্লবীতে মায়ের পরকীয়া প্রেমের বলি ছয় মাসের শিশু আমেনা হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির পল্লবী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- শিশুটির মা মোসা. ফাতেমা বেগম (২৫) ও ফাতেমা বেগমের পরকীয়া প্রেমিক মো. জাফর (৩৬)। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিনগত গভীর রাতে পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পল্লবী থানা সূত্রের বরাতে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ১২৪ নং পিলার সংলগ্ন লেকপাড় থেকে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। শিশুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ দেখতে পায় তার গলায় সন্দেহজনক আঘাতের দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত হত্যা মামলা করে। মামলাটি তদন্তের একপর্যায়ে মৃত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পুলিশ নিশ্চিত হয় শিশুটির নাম আমেনা ও তার বয়স ৬ মাস।

পরিচয় শনাক্তের পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার গভীর রাতে পল্লবী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মৃত শিশুটির মা মোসা. ফাতেমা বেগমকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন, নিবিড় তদন্ত ও ফাতেমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয় জাফর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির মা ফাতেমা বেগমের পরকীয়া প্রেমের কারণে শিশু হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ওই রাতেই জাফরকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে থানা পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, গ্রেপ্তাররা দুজনেই বিবাহিত এবং পল্লবী এলাকায় বসবাস করত। জাফর একটি গার্মেন্টসে কাজ করে। শিশুটির মা ফাতেমা আগে ওই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে জাফরের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। ফাতেমার স্বামী গ্রিলের মেকানিক হিসেবে কাজ করায় কর্মসূত্রে বাসার বাইরে থাকার সুযোগে তারা দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিল। তাদের মধ্যে নিয়মিত শারীরিক সর্ম্পক হতো।

গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৮টায় জাফর ফাতেমার বাসায় শারীরিক সর্ম্পকের জন্য আসে। শিশুটির কান্নাকাটির কারণে তাদের শারীরিক সর্ম্পকে ব্যাঘাত ঘটায় শিশুটিকে প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অবচেতন করা হয় এবং পরে বালিশ চাপা দিয়ে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

পরে বিছানার চাদর দিয়ে শিশুটির মরদেহ মুড়িয়ে কাপড়ের একটি শপিং ব্যাগে ঢুকানো হয়। তারপর জাফর শপিং ব্যাগে করে মরদেহটি নিয়ে মেট্রোরেলের একটি পিলারের কাছে ফেলে আসে। এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গ্রেপ্তার ফাতেমা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর এই শিশু হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে থানা সূত্রে আরো জানা যায়, মৃত শিশুটির পরিচয় উদঘাটনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো হয়। যার ফলে শিশুটির পরিচয় উদঘাটিত হয়। পরে নিবিড় তদন্তের ফলে এই চাঞ্চল্যকর মামলার প্রকৃত তথ্য উদঘাটিত হয়।

গ্রেপ্তার জাফর ৬ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে জাফরের জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram