ক্রীড়া ডেস্ক : ৯ বছর পর যুবাদের হাত ধরে শিরোপার মুখ দেখলো বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল। ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পর থেকে শুরু হওয়া খরা মেটালেন মিরাজুল-নোভারা। নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে স্বাগতিকদের ৪-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্ব জিতেছে তারা। গত আসরে রানার-আপ হওয়ার ক্ষত এবার শিরোপা উল্লাস দিয়ে পুষিয়ে নিলেন বাংলার যুবারা।
২০০৩ সালে ঢাকায় হওয়া সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে অদ্ভুত মিল রয়েছে এবারের শিরোপার।
সেবার ভারতকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। কাঠমান্ডুতে অনূর্ধ্ব-২০ সাফেও হয়েছে তাই। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে টাইব্রেকে হারিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় আজকের ফাইনালে। ২১ বছর আগের ফাইনালে বাংলাদেশ খেলেছিল নিয়মিত অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণকে ছাড়া। আজও বাংলাদেশ খেলে নিয়মিত অধিনায়ক মেহেদী হাসান শ্রাবণকে বাইরে রেখে। তবে ঢাকা স্টেডিয়ামের সেই ভাগ্যটাই আজ পুনরাবৃত্তি হয়েছে কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে। শিরোপা উঠেছে বাংলাদেশের যুবাদের হাতে।
খেলায়ও এর প্রভাব দেখা গেছে। আঙিনায় ভীষণ উজ্জীবিত হয়ে খেলা নেপাল বারবার হানা দিয়েছে বাংলাদেশ রক্ষণে। তবে গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রথমার্ধে নেপাল বেশ কয়েকবার লক্ষ্যে শট করলেও নেপাল পরাস্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ কিপার মোহাম্মদ আসিফকে।
ম্যাচের নবম মিনিটে নিরাঞ্জন ধামির দূরপাল্লার শট পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করেন আসিফ। বিপদ ঘটার আগেই অসাধারণ সেভ করেন মেহেদী হাসান শ্রাবণের জায়গায় খেলতে নামা আসিফ।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে ফের ধামির বক্সের বাইরে থেকে জোড়ালো শট আসিফ রুখে দেন। ২১ মিনিটে ধামির কাটব্যাকে অবিনাশ ভালো জায়গা থেকে এলমেলো শট নিলে সেরা সুযোগ নষ্ট হয় নেপালের।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ফ্রি-কিক থেকে মিরাজুলের অসাধারণ গোলে বাংলাদেশ লিড নেয়। বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক আদায় করে নিয়ে নিজেই ডান পায়ের বাঁকানো শট নেন। তা সাইড পোস্টে আঘাত করে জালে জড়ায়।
বিরতি থেকে ফিরে আবারও গোলের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। ৫৫ মিনিটে মিরাজ জোড়া গোল করে বাংলাদেশকে ফের এগিয়ে নেন। আসাদুল ইসলাম সাকিবের ক্রসে আসাদুল মোল্লা হেড করে গোলমুখে দেন। মিরাজ হেড করে গোলের আনুষ্ঠানিকতা সাড়েন। এরপর ৭১ মিনিটে মিরাজ গোল করান রাহুলকে দিয়ে। বল নিয়ে একাই বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ঢুকে মার্কারকে বডি ডজ দিয়ে আনমার্কড রাহুলকে পাস দেন। রাহুল ডানপায়ের শটে গোল করেন।
৮১ মিনিটে অবশ্য এক গোল শোধ করে নেপাল। ডানদিক থেকে রাম থাপার ক্রসে আসিফ ফ্লাইট মিস করলে সামির তামাং হেডে গোল করে ব্যবধান কমান। তবে ১০ মিনিট যোগ করা সময়ে রাহুলের লো ক্রসে পিয়াস আহমেদ নোভার প্লেসিং নেপাল কিপারের পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়ালে বড় জয়েই শিরোপা উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
নেপাল আবারও দু'হাত ভরে দিলো বাংলাদেশকে। ১৯৯৯ সালে এখানেই সাফ গেমসে ফুটবলে সেরা হয় বাংলাদেশ। ২০২২ সালে প্রথম নারী সাফ শিরোপা স্বাদ বাংলাদেশ পেয়েছিল এখানেই। এবার মিরাজদের অসাধারণ ফুটবল ফের দেশকে দিয়ে দারুণ উদযাপনের উপলক্ষ্য।